অপেক্ষার প্রহর
উম্মে মোসলিমা জ্যোতি
রাত বাড়ছে। নিস্তব্ধতা ঘিরে ধরছে চারপাশ। কিন্তু রাহেলা আজো কুপি পাশে নিয়ে ঘরের দাওয়ায় বসে আছে। তার বিশ্বাস আমির আজ আসবেই।প্রতিদিনই সে এভাবে বসে থাকে। বসে থাকতে থাকতে কখন যে রাত ফুড়িয়ে যায় সে টেরই পায় না। যখন চারপাশের নির্জনতা ভেঙে প্রথম আজানের ধ্বনি শোনা যায় তখন সে বুঝতে পারে আমির আসে নি। অযু করে নামাযে বসে রাহেলা।দুহাত তুলে খোদার কাছে ফরিয়াদ করে, হে খোদা ফিরিয়ে দাও আমার আমিরকে। আমার অনাগত সন্তানকে পিতৃসুখ থেকে বঞ্চিত করো না।
তিন মাস আগের কথা।
আমির বলে গিয়েছিল,চিন্তা করিস না বউ, এইবার গরুগুলা পার করতে পারলে বেশ কিছু টাকা পাবো। মহাজন নিজে বলেছে। তখন দেখবি আর কোনো কষ্ট থাকবে না। আমাদের ভালোবাসার ফসলকে একটা সুন্দর জীবন দিতে পারবো।
কিন্তু সেদিন রাতে ভারত থেকে গরু নিয়ে ফেরার সময় গুলি করে বিএসএফ। সব রাখাল ফিরে এলেও আমির ফেরেনি। ওর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। কেউ জানে না আমির কোথায়। সে কি বিএসঅএফ এর হাতে ধরা পড়েছে নাকি গুলিবিদ্ধ হয়ে চলে গেছে না ফেরার দেশে।
সেই থেকে রাহেলা অপেক্ষার প্রহর গুনে আমির ফিরে আসার। তার দৃঢ় বিশ্বাস আমির ফিরে আসবেই। সেই বিশ্বাস নিয়েই বেঁচে আছে রাহেলা।