গাইবান্ধা শহরের কাচারি বাজারের আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের সামনে জমে উঠেছে জৈষ্ঠের মধু মাসের ফল কচি তাল বা তালের শাঁস বিক্রি। আর এই মধু মাসে তালের আটি ও শাঁস বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে পরিবারের সদস্যদের মুখে অন্ন জোগাচ্ছেন দিপ্তী মিয়া। প্রতি বছর গরমের সময় এই মধু মাসে তালের আটি ও শাঁস বিক্রি করেন তিনি। আর এই শাঁস বিক্রির ইনকামের টাকা দিয়ে দুই ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালানোর পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের মুখে ভালভাবেই অন্ন জোগাচ্ছেন তিনি।
প্রকাশ,গাইবান্ধা শহরের কাচারি বাজারের আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের সামনে জমে উঠেছে জৈষ্ঠের মধু মাসের ফল কচি তাল বা তালের শাঁস।শাঁসকে অনেকে আবার তালের চোখ বলে থাকেন। প্রতি পিস তালের শাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫টাকায়। সে হিসাবে একটি আস্তো কচি তাল বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। ঐ দেখা যায় তাল গাছ, ঐ আমাদের গাঁ, ঐ খানেতে বাস করে কানা বকের ছা’ তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে সব গাছ ছাড়িয়ে উঁকি মারে আকাশে। এমন অনেক ছড়া কবিতা লিখেছেন কবি সাহিত্যিকরা। গাঁয়ে এখন বকের ছানা থাক বা না থাক, জেলার প্রতিটি এলাকার তালগাছ গুলোতে ভরে গেছে কচি তালে। মধু মাসের এ ফলকে কেউ বলে তালের শাঁস, কেউ বলে তালের চোখ, কেউ বলে তালের আটি।
গরমের মধ্যে তৈলাক্ত খাবারের চেয়ে তালের শাঁস অনেক উপকারী। এর মধ্যে রয়েছে আয়রন। তাই জ্যৈষ্ঠের এ মধু মাসে বাজারে নানা ফল উঠলেও সব জায়গায় জনপ্রিয় এই তালের শাঁস। গ্রীস্মের এই দিনে তালের শাঁস খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার। প্রচন্ড গরমে মানুষের যখন পানির তৃষ্ণা লাগে তখন এই তালের শাঁস খেয়ে কিছুটা হলেও তৃষ্ণা মিটান পথচারী সহ বিভিন্ন পেশার মানুষজন। বর্তমানে এর চাহিদা অনেক বেড়েছে। একজন বিক্রেতা শাঁস কেটে তুলতে তুলতে আরো অনেক ক্রেতারা দাড়িয়ে থাকে তালের শাঁস নেবার জন্য। গাইবান্ধা শহর সহ সদর উপজেলার কামারজানি, সাদুল্লাপুরের সাহারবাজার ও বিভিন্ন উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই রয়েছে তাল গাছ। তালের শাঁস বিক্রি করে এই মৌসুমে গাইবান্ধার জেলা সহ বিভিন্ন জেলায় অনেক হত দরিদ্র মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
গাইবান্ধা শহরের কাচারি বাজার এলাকার বাসিন্দা ও তালের শাঁস বিক্রেতা মোঃ দীপ্তি মিয়া জানান, তিনি প্রতিবছরই এ সময়ে তালের শাঁস বিক্রি করে সংসার চালান। গ্রাম অঞ্চল সহ বিভিন্ন জেলা ঘুরে তাল ক্রয় করে গাছ থেকে পেড়ে এনে শাঁস বিক্রি করেন। জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে আষাঢ় মাসের অর্ধেক মাস পর্যন্ত এক মাস চলবে তালের শাঁস বিক্রির কাজ। অন্য সময় তিনি সাগর কলা, চা ও কাপড় বিক্রি করে থাকেন। তবে এবার একটু দেরি করেই চলছে তালের শাঁসের ব্যবসা। প্রতিদিন তিনি সকাল ৯ টা/৯টা ৩০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬টা/৭টা পর্যন্ত ১হাজার থেকে ১হাজার ২শ শাঁস বিক্রি করেন। একটি শাঁস ৫ টাকা ও গোটা তাল ১৫ টাকা দরে বিক্রি করা হয়ে থাকে। প্রতিদিন তিনি ৫থেকে ৬হাজার টাকার তালের আটি বিক্রি করে এতে তার প্রায় ১হাজার ৫শ থেকে ২হাজার টাকা লাভ হয়। তালের শাঁস বিক্রি করে দুই ছেলের লেখাপড়ার চালানোর পরও ৫ জনের সংসার ভালই চলে তার।
গাইবান্ধার বাসিন্দা ও শহরের গোবিন্দপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক মর্তুজা তাসলিম আলম তাল কিনতে এসে জানান-তালের শাস একটি সুস্বাদু ও ফরমালিনমুক্ত দেশীয় ফল। গরম থেকে এসে তালের শাঁস খেতে ভালই লাগে। তালের শাঁস খেলে তৃষ্ণা মেটে। এছাড়াও তালের আটি ও শাঁস বিক্রি করে অনেকের জীবিকা নির্বাহ হয়। ফলে এর চাহিদা অনেক।
বিডি গাইবান্ধা