গাইবান্ধায় ব্যবসায়ী হাসান আলী হত্যার বিচার দায়িত্বে অবহেলার জন্য সদর থানার ওসি মাহাফুজার রহমানকে অপসারণ ও ৪ দফা দাবীতে আগামী ২৪ মে সোমবার সকাল ১১টায় পৌর শহীদ মিনারে গন অবস্থান কর্মসুচী সফল করার লক্ষে আজ ২২মে শনিবার গাইবান্ধা শহরের বিভিন্ন স্থানে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন ব্যবসায়ি হসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চের সমন্বয়ক আমিনুল ইসলাম গোলাপ সিপিবি জেলা সভাপতি মিহির ঘোষ জাসদের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক জনি, এডভোকেট বার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি মোস্তফা মনিরুজ্জামান, সাম্যবাদীআন্দোলনের সমন্বয়ক মনজুরুল আলম মিঠু , বাসদ মার্কসবাদী নেতা আবু রাহেল জাসদ ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ কবির রানা। বক্তারা ২৪ মের গন অবস্থান কর্মসুচী সফল করতে ব্যাবসায়ী সহ সর্বস্তরের জনগণকে উপস্থিত থাকার জন্য আহবান জানান।
উল্লেখ্য, চলমান বছরের গত ৫ মার্চ জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলীকে অপহরণ করে গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানা। এরপর তাকে উদ্ধারের দাবিতে হাসানের স্ত্রী বিথী বেগম থানায় অভিযোগ করলে মাসুদের বাড়ি থেকে উদ্ধারের পর অপহৃত ব্যবসায়ী হাসান আলীকে আবারও অপহরণকারী মাসুদের জিম্মায় দেয় পুলিশ। টানা একমাস মাসুদের বাড়িতে আটক অবস্থায় থাকার পর গত ১০ এপ্রিল শনিবার মাসুদের বাড়ির টয়লেট থেকে ব্যবসায়ী হাসান আলীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর আগে মোবাইল থেকে ক্ষুদে বার্তায় হাসান আলী স্বজনদের জানান মাসুদ রানা তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করে এবং থানায় পুলিশের উপস্থিতিতে তার কাছ থেকে মিথ্যা অঙ্গীকার নেয়। ওই দিনই মাসুদকে আটক করে পুলিশ। পরদিন দলীয় পদ থেকে রোববার মাসুদকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বিথী বেগম বাদী হয়ে মাসুদ রানা, রুমেন হক খলিলুর রহমান বাবুকে আসামি করে সদর থানার দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার অভিযোগ এনে সদর থানায় মামলায় করেন। ওই মামলায় মাসুদ রানাকে গ্রেফতার দেখিয়ে চারদিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। অন্যদিকে ব্যবসায়ী হাসান আলীকে উদ্ধারের পর থানা থেকে অপহরণকারী মাসুদ রানার হাতে তুলে দেয়ার ঘটনায় পুলিশের সম্পৃক্ততা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাহাত গাওহারীকে আহবায়ক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল খায়ের ও পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল লতিফকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করেন পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। ওই কমিটি তদন্ত শেষে ২০ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ঘটনার পরপরই হাসান আলী হত্যার বিচার দাবীতে ফুঁসে ওঠে গাইবান্ধার সর্বস্তরের মানুষ। মানববন্ধন, বিক্ষোভ, স্মারকলিপিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যাহত রাখে রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা। গঠন করা হয় হাসান হত্যা প্রতিবাদ মঞ্চ। এ মঞ্চের উদ্যোগে ব্যবসায়ি হাসান আলী হত্যার বিচার দায়িত্বে অবহেলার জন্য সদর থানার ওসি মাহাফুজার রহমানকে অপসারণ ও ৪ দফা দাবীতে আন্দোলন চলমান রয়েছে।