বুধবার, ৩১ মে ২০২৩, ০৯:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
গাইবান্ধায় অংকুর ফাউন্ডেশন কর্তৃক মেডিকেল শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান গাইবান্ধায় ৮৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত গোবিন্দগঞ্জে জমি অধিগ্রহনে বেসরকারী চক্ষু হাসপাতাল বানিজ্যিক করনের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত  গাইবান্ধায় পুলিশের কঠোর তৎপরতায় কৃষি ব্যাংকের ১৪ লাখ টাকা লুটের রহস্য উন্মোচন সাদুল্লাপুর উপজেলায় ৮৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত গাইবান্ধা শহরের ৩ টি ঔষধের দোকানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা : ৩৬ হাজার টাকা জরিমানা চীন-বাংলাদেশ ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদারে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করলো এইচবিএল গাইবান্ধায় ১৮ জন দরিদ্র ব্যক্তির মাঝে হুইপ গিণি’র মিশুকভ্যান বিতরণ বিএসটিআই কর্তৃক গাইবান্ধায় মোবাইল কোর্ট অভিযান: অবৈধ কসমেটিকস বিক্রি করায় জরিমানা পলাশবাড়ীতে বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুড়ি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ তম বর্ষপূর্তি 

ডাঃ মোজাফ্ফর আহমেদ আই কেয়ার সেন্টার,গাইবান্ধা । ০১৭৬৭-৩০৬৭০২

গোবিন্দগঞ্জে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে গৃহনির্মাণ প্রকল্প কাজ শুরুর আগেই খরচ ৬ কোটি টাকা

আশরাফুল ইসলাম
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৮ মে, ২০২১

বিবেক যখন অন্ধ ,অনিয়ম যখন নিয়ম হয়, এরপর সেই নিয়মের সুফল ভোগী কিছু সরকারি আমলা ও স্থানীয় রাজনীতিবিদগণ আর অনিয়মের স্বীকার ভুক্তভোগী প্রকৃত সুবিধাভোগী গোষ্ঠি। এমন চিত্র উঠে এসেছে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় চলমান মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩৫০টি গৃহ নির্মাণ কাজে সদ্য বদলী হওয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ বর্মনের ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকল্প এলাকায় গৃহনির্মাণ সামগ্রী পৌঁছার আগেই মাত্র ৫ কর্মদিবসে ৬০ ভাগ কাজের অগ্রগতি দেখিয়ে ৬ কোটি ১১ লাখ ৪১ হাজার ১০০ টাকা খরচ দেখান তিনি। এসব প্রকল্পের সভাপতি সহ অন্যান্য সদস্যদের দায়িত্বহীনতার দায় কে নিবেন।

সম্প্রতি এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর অভিযোগ দিয়েছে গোবিন্দগঞ্জ নাগরিক কমিটি। অভিযোগে বলা হয়েছে, ক্রমান্বয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির ৫ সদস্যের মাধ্যমে কেনাকাটা বা খরচ করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। কাজের গুনগতমান নিশ্চিত করা ও কাজের তদারকি করছেন দুই নৈশপ্রহরী। ওইসব গৃহনির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন নাগরিক কমিটি। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সুবিধাভোগি ভুমিহীন ও গৃহহীনদের কাছ থেকে ঘরের মেঝেতে তাদের নিজ খরচে জোর পূর্বক বালি ও মাটি ভরাট করে নেয়া হচ্ছে। এতে প্রতিটি ঘরের মেঝেতে বালি ও মাটি ভরাটে ভুমিহীন ও গৃহহীনদের ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর হতে ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য দুইকক্ষ বিশিষ্ট গৃহনির্মাণ আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩৫০টি গৃহ নির্মাণের কাজ হাতে নেয় সরকার। এরমধ্যে উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের নলডাঙ্গা গ্রামে ১২০টি গৃহ, কামদিয়া ইউনিয়নে শুকুপুকুরপাড়ে ৩৫টি, বেশাইন গোলামগাড়ী পুকুরপাড়ে ২৯টি, বিনার পুকুরপাড়ে ২২টি, জোড়পুকুরপাড়ে ৪৫টি, ষাটপুকুরপাড়ে ২৪টি, শাখাহার ইউনিয়নে শিহিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ১৫টি এবং মদিয়ার পুকুরপাড়ে ৬০টি গৃহ নির্মাণ করার কথা। এসব কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ৬ কোটি ৮২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার বরাদ্দ পাওয়া যায়। এরমধ্যে গৃহনির্মাণ ব্যয় ৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, পরিবহন ব্যয় ১৪ লাখ ৫০ হাজার ও জ্বালানী ব্যয় ২৫ হাজার টাকা। এই প্রকল্পের টাকা হিসাব রক্ষন কার্যালয় থেকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড গোবিন্দগঞ্জ শাখায় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ বর্মণের একক স্বাক্ষরে গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের হিসাব নম্বরে জমা রাখা হয়। এর মধ্যেই গত ২০ ফেব্রুয়ারি ইউএনও রামকৃষ্ণ বর্মনের বদলীর আদেশ হয়। কিন্তু তিনি বদলীর আদেশ ঠেকাতে তদবির শুরু করলে বিভিন্ন মহলের চাপে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক ৯ মার্চ তাকে লালমনিরহাটের পাটগ্রামে ইউএনও হিসেবে বদলি (স্ট্যান্ড রিলিজ) করেন। তিনি গত ১০ মার্চ দায়িত্ব বুঝে দিয়ে লালমনিরহাটের পাটগ্রামে চলে যান।

অভিযোগে বলা হয়, রামকৃষ্ণ বর্মন দায়িত্ব বুঝে দেওয়ার তিনদিন আগে গত ৭ মার্চ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির কাগজে কলমে একটি সভা দেখান। সভার রেজুলেশনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া গৃহ নির্মাণের জন্য ৬ কোটি ৮২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্র্যাক ব্যাংকে জমা আছে মর্মে উল্লেখ করেন। একই রেজুলেশনে তিনি ৩৫০টি ঘর নির্মাণের জন্য কাজের ৬০ ভাগ অগ্রগতি দেখিয়ে ২০টি চেক ও দুইটি আরটিজিসি ফরম মুলে ৬ কোটি ১১ লাখ ৪১ হাজার ১০০ টাকা খরচ (বিভিন্ন ব্যক্তির নামে চেক প্রদান) দেখান। যা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির অধিকাংশ সদস্যই জানেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার একজন কর্মকর্তা জানান, যাদের নামে চেক ইস্যু করা হয়েছে তাদের অধিকাংশ লোককে উপজেলার কোন কমকর্তা- কর্মচারি চেনেন না। চেক গুলো নামে-বেনামে দেওয়া হয়েছে। যার টাকা নৈশ প্রহরী ফিরোজ ও মামুনের মাধ্যমে উত্তোলন কর হয়েছে। রামকৃষ্ণ বর্মন বর্তমানে ঠাকুরগাও জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে গণমাধ্যমকে বলেন, অল্প সময়ে টাকা উত্তোলন ও খরচ করতে কোনো বিধিনিষেধ নেই। নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি তা করতে পারে। টাকা উত্তোলন ও খরচ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সকল সদস্যের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে করা হয়েছে। একসঙ্গে খরচ করায় অনেক টাকা সাশ্রয় হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া গৃহ নির্মাণ নীতিমালা ২০২০ অনুযায়ী ৫ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় (ডিপিএম) পদ্ধতিতে গৃহ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার কথা। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদস্য সচিব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, সদস্য সহকারী কমিশনার (ভুমি), উপজেলা প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এই কমিটি অনুমোদিত নকশা ও প্রাক্কলন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গৃহ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য কামদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশাহেদ হোসেন বাবলু ও দরবস্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গৃহ নির্মানের ব্যাপারে সাবেক ইউএনওর কাছে কিছু জানতে চাইলেই তিনি ক্ষেপে যেতেন। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি ঘরের জন্য নৈশ প্রহরীরা ২৮ বস্তা করে সিমেন্ট, নি¤œমানের ইট, বালু ও কাঠ সরবরাহ করছে। অথচ প্রতিটি ঘরের নির্মাণকাজে ৬০ বস্তা করে সিমেন্ট সরবরাহ করার কথা। এছাড়া কেনাকাটা, কাজের গুনগত মান নিশ্চিত করণ ও তদারকি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলী করার কথা থাকলেও ইউএনও দুই নৈশ প্রহরী ফিরোজ ও মামুনকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছেন।

গৃহনির্মাণ কাজের কেনাকাটা ও তদারকির সাথে জড়িত নৈশ প্রহরী মামুন ও ফিরোজ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ইউএনও স্যার আমাদের দিয়ে কাজ করালে আমরা তা করতে বাধ্য।

বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সাঈদ এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমি ১৬ মার্চ যোগদানের পর জানতে পারি প্রকল্পের হিসাব নম্বরে প্রায় ৭১ লাখ ৩২ হাজার টাকা জমা আছে। গৃহনির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সার্বিক কাজ তদারকি করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গাইবান্ধা জেলা জুড়ে এসব বাড়ী নির্মাণ প্রকল্পের কাজের ব্যাপক অনিয়মের মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। এ সুবিধা পেতে সুবিধাভোগীদের নানা ভাবে যেমন হয়রানি হতে হয়েছে তেমনি সুবিধাভোগীদের নিজ অর্থে অনেক কাজ করতে হয়েছে। এসব ঘর নির্মাণের যে সব সামগ্রী ব্যবহারের বরাদ্দ রাখা হয় সে সব জিনিস পত্রের বিপরিতে নিম্ন মানের বালু,ইট,কাঠ,ব্যবহার করা হয়েছে। নির্মানাধীন ঘর গুলো দূযোগ সহনীয় দাবী করা হলেও আদৌ সে গুলো ছোট খাটো কোন দূযোগে ঠিক থাকবে কি না খোদ সুবিধাভোগীদের সন্দেহ ধরেছে। গাইবান্ধা সদর উপজেলাসহ জেলার প্রতিটি উপজেলায় একই ভাবে অনিয়মের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্প আশ্রয়ন -২ প্রকল্পের কাজ কর্ম বাস্তবায়ন হওয়ায় জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করেছেন সচেতন মহল।

Print Friendly, PDF & Email

যমুনা প্লাজা,গাইবান্ধা -01740569856

জিনিয়াস কিন্ডার গার্টেন এন্ড স্কুল ও জিনিয়াস এডুকেয়ার

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের নামাজের সময়সুচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৩:৫০ পূর্বাহ্ণ
  • ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ
  • ১৬:৩৪ অপরাহ্ণ
  • ১৮:৪২ অপরাহ্ণ
  • ২০:০৬ অপরাহ্ণ
  • ৫:১২ পূর্বাহ্ণ
bdgaibandha.news©2020 All rights reserved
themesba-lates1749691102