দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকা’ ঢাকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম গ্রেফতার হওয়ায় তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবীতে গাইবান্ধায় মানববন্ধন করেছে।
সচেতন নাগরিক ও সাংবাদিক সমাজ মঙ্গলবার দুপুরে গাইবান্ধা শহরের আসাদুজ্জামান মার্কেটের সামনে মানববন্ধন করে।
এ সময় বক্তব্য রাখেন-কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম গোলাপ, উদিচী শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতি জহুরুল কাইয়ুম, জাসদ গাইবান্ধা সভাপতি গোলাম মারুফ মনা, কবি ও সাংস্কৃতিক কর্মী দেবাশীষ দাস দেবু, সাংবাদিক ও সমাজকর্মী জাহাঙ্গীর কবির তনু,কালের কন্ঠের প্রতিনিধি অমিতাভ দাস হিমুন, ডিবিসি টেলিভিশন প্রতিনিধি রিক্তু প্রসাদ গাইবান্ধা জেলা বার এ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ সিরাজুল ইসলাম বাবু, কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল, প্রথম আলোর গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি শাহাবুল শাহীন তোতা, এশিয়ান টিভির প্রতিনিধি খালেদ হোসেন, পদক্ষেপ সভাপতি আলাল আহমেদ, জাতীয় যুব জোট গাইবান্ধার সভাপতি সুজন প্রসাদ, সময় টিভির ষ্টাফ রিপোর্টার হেদায়েতুল ইসলাম বাবু সহ অনেকে।
বক্তারা দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকা’ ঢাকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম নিঃশর্ত মুক্তির দাবী সহ তদন্ত করে দূূনীতিবাজ কর্মকর্তাদের গ্রেফতার দাবী জানান।
প্রসঙ্গত, ১৭ মে সোমবার অনুমতি ছাড়া করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের সরকারি নথির ছবি তোলার অভিযোগে দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখার পর শাহবাগ থানা পুলিশে সোপর্দ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
রাত সাড়ে আটটার পরে শাহবাগ থানা পুলিশের একটি টিম সচিবালয় থেকে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নিয়ে যায়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সিব্বির আহমেদ ওসমানী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এদিন দুপুরে স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার একান্ত সচিব সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়ার অনুপস্থিতিতে অফিস কক্ষে ঢুকলে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের সরকারি নথির ছবি তোলার অভিযোগ ওঠে।
সেখানেই টানা পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয় তাকে। এ বিষয়ে সচিবালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকেরা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেন। কিন্তু সচিবের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান সাংবাদিকদের বলেন, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে কিছু নথির ছবি তোলার অভিযোগ এনে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পরিবারের সদস্যরা জানান, সোমবার দুপুরে এক সোর্সের কাছ থেকে কিছু কাগজ সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম। এসময় স্বাস্থ্য সচিব তার কক্ষে না থাকায় প্রথমে ঢুকতে না চাইলেও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের অনুরোধে রুমে প্রবেশ করেন তিনি।
পরিবারের সদস্যরা আরও জানান, রুমে প্রবেশ করে একটি পত্রিকা পড়তে শুরু করলে হঠাৎ করেই মন্ত্রণালয়ের সাত আটজন কর্মী রোজিনা ইসলামের ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে কিছু কাগজপত্র ব্যাগে ঢুকিয়ে তার বিরুদ্ধে নথি চুরির অভিযোগ এনে হেনস্তা শুরু করে।
এরপর দীর্ঘ প্রায় ছয় ঘণ্টা একটি কক্ষে আটকে রাখার পর রাত সাড়ে আটটার দিকে শাহবাগ থানা পুলিশের একটি টিমের হাতে রোজিনা ইসলামকে হস্তান্তর করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বিডি গাইবান্ধা/