প্রধানমন্ত্রীর নাতি পরিচয়ে চাকরি দেয়ার নামে প্রায় ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গাইবান্ধা জেলা আ’লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক (বরখাস্তকৃত) মাসুদ রানার ভাই জুয়েল রানাকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৪ মে) সকালে সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের বাড়ি থেকে তাকে আটক করে সদর থানা পুলিশ।
আটক জুয়েল মিয়া (৩৫) সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে। জুয়েল গাইবান্ধা জেলা আ’লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক (বরখাস্তকৃত) মাসুদ রানার ছোট ভাই।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাফুজার রহমান জানান, জুয়েল রানা নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর নাতির পরিচয় দিয়ে চাকরি দেয়ার নামে বিভিন্ন মানুষের কাছে টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছিলো। সম্প্রতি জুয়েল রানার বিরুদ্ধে সদর থানায় পৃথক লিখিত অভিযোগ করেন দুই ভুক্তভোগী। এরমধ্যে রেলওয়েতে চাকরি দেয়ার কথা বলে দুলা মিয়ার নামের একজনের কাছে ২৩ লাখ টাকা ও সাহাদুল ইসলাম নামের অপরজনের কাছ থেকে ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় জুয়েল রানা। অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় জুয়েল রানাকে আটক করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জুয়েল মিয়ার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে সদর থানায় দুটি মামলা দায়ের হয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রতারক জুয়েল রানাকে আদালতে পাঠিয়ে সাতদিনের রিমাণ্ড আবেদন করা হয়। পরে শুনানী শেষে একদিনের (জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদ) রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। জুয়েল রানা চাকরির কথা বলে আরও কার কাছে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এছাড়া প্রতারণা করে হাতিয়ে নেওয়া টাকা জুয়েল কি করেছে এবং তার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, ভুক্তভোগী দুলা মিয়া ও তার স্বজনরা জানান, রেলওয়েতে বুকিং সহকারির চাকরির কথা বলে জুয়েল রানা বিভিন্ন সময় ব্যাংক এ্যাকাউন্ট ও মোবাইল ফোন নগদসহ প্রায় ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। কিন্তু দীর্ঘদিনেও চাকরি ও টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো হুমকি দেয় জুয়েল। পরে বাধ্য হয়ে প্রতারণার বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করি।
উল্লেখ, জুয়েল রানার ভাই জেলা আ’লীগ নেতা মাসুদ রানা সুদের টাকার জন্য গত ৫ মার্চ শহরের ব্যবসায়ী হাসান আলীকে অপহরণ করে তার নিজ বাসায় আটক রাখেন। পরে ১০ এপ্রিল তার বাসা থেকে হাসান আলীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মাসুদ রানাসহ তিনজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করে নিহতের স্ত্রী বিথি বেগম। ঘটনার পর মাসুদ রানাকে আটক করে পুলিশ। এরপর থেকে জেলা কারাগারে রয়েছে মাসুদ রানা। এছাড়া এ ঘটনায় দল থেকে মাসুদ রানাকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।
বিডি গাইবান্ধা ডট নিউজ /সম্পাদক