সঞ্জয় সাহা বয়স (৩৮)। তার বয়স যখন ২২ বছর, তখন শখের বসে শুরু করে পত্রিকায় সংবাদ লেখালেখির কাজ। সেটি ধীরে ধীরে নেশা থেকে পেশায় পরিনত হয় তার। দীঘ ১৬ বছর ধরে বাইসাইকেলের প্যাডেল চালিয়ে অফিস-আদালত ও মাঠে-ময়দানে তথ্য সংগ্রহ করে আসলেও, আজও তার কপালে জোটেনি একটি মোটরসাইকেল। যেন অন্যের কথা বলতে গিয়ে দেয়ালে ঠেকেছে নিজের পিঠ।?
১ মে শনিবার গাইবান্ধা শহরে দেখা হয় ওই সংবাদকর্মী সঞ্জয় সাহার সঙ্গে। এসময় তিনি মত্ত ছিলেন পত্রিকায় তার লেখা সংবাদ পড়তে। ব্যস্ত ছিলেন তথ্য সংগ্রহ করতে।
সঞ্জয় সাহার বাড়ি গাইবান্ধা শহরের ব্রিজ রোড কালিবাড়ী পাড়ায়। তিনি ওই এলাকার মৃত চিত্তরঞ্জণ সাহার ৩য় পুত্র। জেলা পর্যায়ের সংবাদকর্মী হিসেবে কাজ করছেন।
জানা যায়, সঞ্জয় সাহা গত ২০০৫ সালে গণমানুষের কথা তুলে ধরতে সংবাদকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে। সেই থেকে দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত বাইসাইকেল যোগে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে তথ্যের খোঁজে ছুটে চলছেন অবিরত। তার লেখা সংবাদগুলো সবই যেনো জনস্বার্থের। সংবাদ তৈরির জন্য যে কোনো তথ্যের সন্ধানে তিনি বাইসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে ছুটে চলেন বীরদর্পে। এভাবে বস্তনিষ্ঠ সংবাদকর্মী জীবনে তার কর্মরত কোন অফিস থেকে পায়নি তেমন সম্মানি। তাই নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়াতে জীবনে নেমে এসেছে অন্ধকার। এ পেশা ছাড়তে চাইলেও তা পারছে না নেশার টানে। তবুও হাতে হ্যান্ডেল আর পায়ে প্যাডেল মেরে বাইসাকেল চালিয়ে ছুটে চলছেন জেলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তরে। এখন পেশার প্রয়োজনে একটি মোটরসাইকেলের প্রয়োজন হলেও অর্থাভাবে কিনতে পারছে না সেটি। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে তার ফেসবুক পেজে একটি পোস্টও দিয়েছেন সঞ্জয়।
এই সংবাদকর্মী সঞ্জয় সাহা জানান, গত ২০০৫ সালে গাইবান্ধার স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক ঘাঘট তার হাতেখড়ি। এরপর বার্তা সম্পাদক হিসেবে কাজ নেন স্থানীয় সাপ্তাহিক অবিরাম পত্রিকায়। সেই থেকে স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে কাজ করেছেন। বর্তমানে জাতীয় দৈনিক নতুন দিন পত্রিকায় জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। তবে ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত তিনি।
সঞ্জয় সাহা আরো বলেন, এ পেশায় নিজের জীবন টা আলোকিত করতে না পারলেও অন্যের জন্য সংবাদ তুলে ধরে আলোকিত করেছি শতাধিক পরিবারে। এমনকি প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদেরও কাজে লেগেছে সংবাদগুলো। তবে সঞ্জয় সাহার নিজের একটি মোটরসাইকেল হলে হয়তো আরো উপকৃত হবেন অনেকে। কাঙ্খিত মোটরসাইকেলটি যদি কোন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কিংবা কোন বিবেকবান মানুষ কিনে দিতেন, তাহলে উন্নয়ন সাংবাদিকতার দিকে ধাবিত হওয়া সম্ভব হবে তার।
বিডি গাইবান্ধা/