দেশব্যাপী মহামারী করনা ভাইরাসের কারনে চলছে লকডাউন। এলাকায় কাজ না থাকায় বেকার রয়েছেন গাইবান্ধার ৭ উপজেলার কৃষি শ্রমিকরা। এতে করে অর্থ সংকটে পড়ে যাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন কাটছিল তাদের।
প্রতিবছর এ সময় পরিবারের সদস্যদের মুখে অন্ন জোগাতে সদর উপজেলা সহ গাইবান্ধা জেলার ৭ উপজেলার কৃষি শ্রমিকরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাওর, বাওড় সহ বিভিন্ন অঞ্চলে ধান কাটতে যান কৃষকরা। করনায় বসে না থেকে এবারো তারা যাচ্ছে ধান কাটতে।
প্রতিবছরের ন্যায় বুধবার বিকালে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গাইবান্ধা জেলা মানবিক পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ৭ টি বাসযোগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রায় ২৫০ জন কৃষি শ্রমিককে নাটোর, নওগা, বগুড়ার নন্দীগ্রাম এর হাওড়, বাওড়, চলনবিল ও বিভিন্ন অঞ্চলে জরুরী ভিত্তিতে ধান কাটার জন্য প্রেরন করেন। এর আগে তাদেরকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী মাস্ক, স্যানিটাইজার দিয়ে শরীরের টেম্পারেচার পরীক্ষা করান ও তাদেরকে খাদ্য বিতরণ করেন।
এতে সহযোগীতায় ছিলেন গাইবান্ধা বেসরকারি এনজিও প্রতিষ্ঠান গন উন্নয়ন কেন্দ্র।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেডকোয়ার্টার মোঃ আবু খায়ের, অতিরিক্ত পুলিশ বি সার্কেল আবু লায়েচ মোঃ ইলিয়াছ জিকু, ট্রাফিক ইনচার্জ নূর আলম সিদ্দিক, ট্রাফিক অফিসার তৌহিদুল ইসলাম, আজিজ, গন উন্নয়ন কেন্দ্র জেলা সমন্বয়কারী আবু সাইদ তুহিন, উপজেলা কো-অর্ডিনেটর আল ফারুক সরকার মুরাদ সহ অন্যান্য পুলিশ ও ট্রাফিক সদস্যরা।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকুচির কৃষি শ্রমিক মোঃ নওশাদ জানান- প্রতি বছরের মতো এবারো আমরা ধান কাটার জন্য বগুড়ার নন্দীগ্রাম গ্রামে যাচ্ছি। জমির মালিক আমাদেরকে কল করে নিয়ে যায়। আমরা প্রায় ২২ জন শ্রমিক ধান কাটার উদ্দেশ্যে যাচ্ছি। নিজ এলাকায় কাজ না থাকায় তাদের পরিবারের মুখে অন্ন যোগাতে বাহিরে যাচ্ছেন৷ বাহিরে গেলে এলাকার থেকে ৩ থেকে ৪শ টাকা বেশি পারিশ্রমিক পেয়ে থাকি নেই। আশা করি এবারো তাই পাবো। তার পরিবারে প্রায় ৬ জন সদস্য।
গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম দৈনিক নতুন দিন পত্রিকার প্রতিবেদক কে জানান-মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নাটোর, নওগা, বগুড়া সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাওড়, বাওড়, চলনবিলগুলোতে ধান কাটা শ্রমিক প্রেরন করা হচ্ছে। করনার ক্রান্তিলগ্নে গত বারের মতো এবারো আমরা প্রেরণ করছি। আমরা অদৃশ্য শক্তির মোকাবেলা করছি। সারাবিশ্ব এর যুদ্ধ করছে। একইভাবে আমরা তা উপলব্ধি করছি। করনার সময়কালীন স্বাস্থ্য, সুরক্ষা মেইনটেইন করছি। সে শারিরীক ভাবে সুস্থ কিনা তা চেক করে পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেইনটেইন করে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী মাস্ক, স্যানিটাইজার দিয়ে ও বডির টেম্পারেচার পরীক্ষা করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ধান কাটাতে কৃষি শ্রমিক প্রেরণ করছি। প্রান্তিক জনগোষ্ঠির উৎসব এটা। তারা যেন বসে না থাকে। এ জন্য সহযোগীতা করা দরকার। জেলা পুলিশ সব সময় পাশে রয়েছে। এটা অব্যাহত থাকবে। যতদিন ধান কাটা চলবে ততদিন এভাবে শ্রমিক পাঠানো হবে।
বিডি গাইবান্ধা/