গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের ছোট নারায়নপুর গ্রামের মমতাজ মাষ্টারের ছেলে। আসাদুর রহমান শাকিলের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার সোমা তার স্বামী শাকিলের বিরুদ্ধে আজ বিকাল ৩ টায় বিজয় টিভির গাইবান্ধা জেলা কার্যলয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
এসময় ভুক্তভুগী সুমাইয়া আক্তার সোমা সাংবাদিকদের বলেন তার স্বামী শাকিল একজন প্রতারক,নারী-লোভী,লম্পট ও অর্থলোভী তিনি সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, আমার বাবা মোঃ সিরাজুদ্দৌলা, সাং- চালিয়াগুপ, থানা- পাকুন্দিয়া, জেলা- কিশোরগঞ্জ আমার সাথে ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের ছোট নারায়নপুর গ্রামের মমতাজ মাস্টারের ছেলে আসাদুর রহমান শাকিলের বিবাহ সম্পন্ন হয়। প্রতারক, নারীলোভী, লম্পট ও অর্থলোভী আসাদুর রহমান শাকিল আমার পরিবারের কাছে তার বিভিন্ন তথ্য গোপন করিয়া ঘর সংসার করিবে মর্মে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়া গত ১ বছর পূর্বে ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী দুই পরিবারের সম্মতিক্রমে ৩ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করিয়া আমাদের বিবাহ সমপন্ন হয়। বিবাহের পর নতুন বউ হিসেবে শাকিলের বাড়িতে ১ম আসিলে পাড়া প্রতিবেশির কাছে জানতে পারি পুর্বেও ৩ টি বিবাহ করেছিলো শাকিল। ইহা জানার পর আমার বাবার বাড়িতে ফিরে গিয়ে না আসার ইচ্ছা পোষন করিলে শাকিল ও তার পিতা মমতাজ আমার বাবাকে বিভিন্নভাবে ফুসলাইয়া আমার পরিবারকে রাজি করিয়া আমাকে আবার নিয়ে আসে। এবং নিয়ে আসার পর থেকে যৌতুক চাহিয়া আমার উপর বিভিন্নভাবে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করিয়া আসিতে থাকে। এভাবে আমাদের প্রায় ৯ মাস ঘর সংসার চলিতে থাকে। এক পর্যায়ে তার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আমি আবারও আমার বাবার বাড়িতে চলিয়া যায়। আবারও শাকিল আমাকে নিয়ে আসিতে চেষ্টা করিলে এক পর্যায়ে আমাকে নিয়ে ঢাকায় থাকিবে মর্মে আমাকে ভুল-ভাল বুঝাইয়া আবার নিয়ে আসে এবং ঢাকায় নিয়ে যায়। ঢাকায় গিয়ে কিছুদিন যেতে না যেতেই বাসার আশেপাশের বিভিন্ন দোকান থেকে প্রায় ৩০ হাজার বাকি রাখিয়া আমাকে ঢাকার ফেলিয়া চলিয়া আসে। তারপর দোকানদারদের বাকি টাকা পরিশোধের জন্য আমার উপর বিভিন্ন চাপ প্রয়োগ করিতে থাকে। আমি চাপ সহ্য করিতে না পেরে বাধ্য হয়ে আমার স্বামীর খোজে ঢাকা থেকে গোবিন্দগঞ্জে চলে আসি। গোবিন্দগঞ্জে এসে শাকিলের এলাকাবাসীর কাছে জানতে পারি অর্থলোভী শাকিল আমাকে রেখে আরও এক মেয়েকে মোটা অংকের যৌতুকের বিনিময়ে বিয়ে করেছে। আমি নিরুপায় হয়ে গত ১৫ এপ্রিল শাকিলের বড় ভাইয়ের ঔষধের দোকানে গিয়ে শাকিলকে দেখতে পাই এবং তার কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শাকিলের পরিবারের সদস্যরা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ অনেক লোকের সামনে আমার উপর শারিরীক নির্যাতন চালায়। আমাকে নির্যাতন করার সময় বাজারে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হলে নিজেকে বাঁচানোর তাগিদে ৯৯৯ এ ফোন দিই। পরে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আমাকে ও শাকিলের পরিবারের ৩ সদস্যসহ থানায় নিয়ে আসে। থানায় আনার পর গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় আমাকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে আমি বাদী হয়ে ধারা-২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ( সংশোধনী/২০০৩) এর ১১ (গ)/৩০; ধারায় ৫ জনকে আসামী করে গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করি।
থানায় মামলা হওয়ার পর ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য শাকিলের বাবা মমতাজ মাস্টার গোবিন্দগঞ্জের বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের যোগসাজসে আমাকেসহ আরও ৮ জনকে অভিযুক্ত করে গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ অভিযোগে যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে তাহারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না, শাকিলের বাবা তার ছেলেকে বাঁচাতে ও ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করতে এবং আমাদেরকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে এই ভিত্তিহীন অভিযোগটি দায়ের করেছেন। শুধু তাই নয় বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল কাটাখালী নিউজে একটি ভিত্তিহীন সংবাদও প্রকাশ করা হয়েছে। সংবাদে যেসকল তথ্য-উপাত্ত দেয়া হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। সংবাদে উপস্থাপন করা তথ্যগুলো আমাকে ও আমাদেরকে সামাজিকভাবে হেয় করেছে।
আমি আপনাদের মাধ্যমে লম্পট, প্রতারক ও অর্থলোভী শাকিলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি। আর যাতে কোন মেয়ে শাকিলের দ্বারা প্রতারিত না হয় সে ব্যাপারে আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।