সুদের টাকা দিতে ব্যার্থ হওয়ায় গাইবান্ধায় আওয়ামীলীগ নেতা মাসুদ রানার বাড়িতে ব্যবসায়ী হাসান আলীকে (৪৫) হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে ফুঁসে উঠেছে গাইবান্ধাবাসী। আজও দুপুরে জেলা শহরের ডিবি রোডের আসাদুজ্জামান মার্কেটের সামনে বিক্ষোভ এবং মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাট্রিজের আয়োজনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠনের নেতাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন। এছাড়া নিহত হাসান আলীর স্ত্রী বিথি বেগম, ছোট ছেলে হেদায়েতু ইসলাম শাফিনসহ স্বজনরাও অংশ নেয় মানববন্ধনে।
মানববন্ধনে বক্তারা, হাসান আলীর হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত, দাদন ব্যবসায়ী আ.লীগ নেতা মাসুদ রানাসহ তার সহযোগি রুমেন হক ও খলিলুর রহমান বাবুর ফাঁসির দাবি জানান। একই সঙ্গে হত্যার ঘটনায় জড়িত সদর থানার জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের অপসারণসহ মদতদাতাদেরও চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবিও করেন বক্তারা।
গত ৫ মার্চ হাসান আলীকে অপহরণ করে নিজ বাড়িতে নিয়ে আটক করে রাখে গাইবান্ধা জেলা আওয়ামীলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানা। পরিবারের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সদর থানার পুলিশ হাসান আলীকে উদ্ধার করে। কিন্তু মাসুদ রানার পক্ষে পুলিশ প্রভাবিত হয়ে মুচলেকা নিয়ে আবারও তার জিম্মায় হাসান আলীকে তুলে দেয়। এরপর শনিবার (১০ মার্চ) সকালে মাসুদ রানার বাড়ি সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রাম থেকে হাসান আলীর ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করাসহ অভিযুক্ত মাসুদ রানাকে আটক করে। হত্যার একদিন পর রবিবার বিকেলে হাসান আলীর স্ত্রী বিথী বেগম বাদি হয়ে মাসুদ রানা ছাড়াও স্থানীয় ব্যবসায়ী রুমেন হক ও খলিলুর রহমান বাবুকে আসামি করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। যদিও প্রধান আসামি মাসুদ রানাকে আটকের পর চারদিনের রিমাণ্ডে নিয়েছে পুলিশ। তবে মামলার অপর দুই আসামি রুমেন ও বাবুকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এরআগে, হাসান আলী হত্যার ঘটনা তদন্তে গাইবান্ধা জেলা পুলিশ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয কমিটির নির্দেশে মাসুদ রানাকে জেলা আওয়ামীলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক পদ থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।