সাদুল্লাপুরে সবার মাঝে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে ও কাজ করছে তরুণদের গড়া সংগঠন ‘পরিবর্তন সংঘ’এর “পরিবর্তন পাঠাগার”। সচেতন মানুষ হিসেবে বই উপহার দিয়ে পাঠাগারের সংগ্রহকে সমৃদ্ধ করতে এগিয়ে এসেছেন সাদুল্লাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদ রানা ও তনন্ত মোস্তাফিজ দেওয়ান। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন পরিবর্তন পাঠাগার এর সভাপতি মাহামুদুল হাসান সোহাগ,সাধারণ সম্পাদক মোরসালিন মুন্না, উপদেষ্টা সতেজ সওকত। বই উপহার দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে অফিসার ইনচার্জ বলেন,মানুষের চিন্তাধারাকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার অন্যতম মাধ্যম বই। মানুষ তার মনের ভাব, অনুভূতি, জ্ঞান, প্রজ্ঞা, স্মৃতিময় অভিজ্ঞতার বিবরণ বইয়ের মাধ্যমে সংরক্ষণ করে। বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে বইয়ের জায়গা দখল করে নিয়েছে ফেসবুক, ইন্টারনেটভিত্তিক পড়াশোনা-যা কেড়ে নিয়েছে মানুষের বই পড়ার অভ্যাস। আগে প্রতিটি এলাকায় লাইব্রেরি ছিল। বই নিয়ে মানুষ সেখানে আড্ডায় লিপ্ত হতো। সেগুলো এখন নেই বললেই চলে।
বই হচ্ছে মানুষের শ্রেষ্ঠ সম্পদ, যার সঙ্গে পার্থিব কোনো সম্পদের তুলনা চলে না। পার্থিব জীবনের সম্পদগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু বইয়ের অর্জিত সম্পদ ধ্বংস হয় না; বরং ভবিষ্যৎ জীবনে উন্নতি ঘটানোর মাধ্যম হিসাবে কার্যকর ভূমিকা রাখে। বই হলো সংস্কৃতি, সভ্যতা ও যোগাযোগের অন্যতম বাহন। বই এক শতাব্দী থেকে অন্য শতাব্দীতে জ্ঞানকে বহন করে নিয়ে যায়।
বইপড়ার মাধ্যমে আমাদের জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃত হয়। ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়। আমাদের কল্পনাশক্তি বৃদ্ধি করতে বই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কল্পনাগুলো সুন্দরভাবে সাজিয়ে বাস্তবে রূপায়িত করা যায় কীভাবে-সে সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যায় বইয়ের মাধ্যমে। বইপড়ার মধ্যদিয়ে লেখনীশক্তিও বৃদ্ধি করা সম্ভব। এ ব্যাপারে সভাপতি সোহাগ বলেন, তরুণদের মনকে উজ্জীবিত করার অন্যতম মাধ্যম হলো বই। বইপড়ার মধ্যদিয়ে তরুণরা দেশ সম্পর্কে জানবে, দেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানবে, দেশ স্বাধীন করতে যারা বিশেষ অবদান রেখেছেন তাদের সম্পর্কে জানবে। আর সেই জানার মধ্যদিয়ে তরুণরা দেশ গড়ার প্রত্যয়ে নিজেদের গড়ে তুলতে একটি করে বই উপহার দিয়ে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উন্মুক্ত জ্ঞান চর্চার ব্যবস্থা করবে এই কামনা করছি। পরিবর্তন পাঠাগারের অন্যতম সদস্য সতেজ বলেন, দেশে বই মেলাসহ বইয়ের প্রচারে নানা আয়োজন করা হয়। কিন্তু কীভাবে বইপড়ার প্রতি মানুষকে আগ্রহী করে তোলা যায়-তা কি কখনো ভেবে দেখেছি দেশে শিশুকাল থেকে বইপড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য কোনো কর্মসূচি পালন কর হয় না। এসব করা হয়-না বলেই বইপড়ার আগ্রহ কমে যাচ্ছে মানুষের।
তাই পরিশেষে বলতে চাই, বইপড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে আমাদের। এ জন্য বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করতে হবে। আসুন, আমরা আমাদের প্রিয় মানুষকে উপহার হিসাবে বই দেওয়ার প্রচলন করি। আগের সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে আমাদের। দেশের প্রত্যেক জায়গায় লাইব্রেরি স্থাপন করতে হবে। তাহলেই মানুষ বইপড়ার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে। তারা গড়ে উঠবে সুনাগরিক হিসাবে। বই হোক উপহারের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। বই গড়ে তুলুক একটি আলোকিত বাংলাদেশ।