যৌতুক না পেয়ে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় শারমিন বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূকে মারপিটের পর শরীরে আগুন ধরিয়ে ঘরে তালাবন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শাশুড়ীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গৃহবধূর শরীরের ৫০ শতাংশ অংশ পুড়ে গেছে। ঝলছে গেছে মেয়েটির শরীরের বিভিন্ন স্থান।
মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যার পর অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ শারমিন বেগমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে নেয়া হয়।
শারমিন বেগম গাইবান্ধা সদর উপজেলার মালিবাড়ি ইউনিয়নের কাবিলের বাজার এলাকার শফিউল ইসলামের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানায়, মাত্র বছর দুয়েক আগে শারমিন বেগমের বিয়ে হয় একই এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে কোরবান আলীর সাথে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকসহ নানা কারণে মেয়েটিকে নির্যাতন করে আসছিল স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন। সময়ে অসময়ে প্রায়ই তাকে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করা হতো।
তারা আরও জানান, যৌতুক না পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে স্বামী কোরবান আলী ও তার মা কুলসুম বেগম গৃহবধূ শারমিনকে বেধরক মারপিট করেন। এ সময় এক পর্যায়ে স্বামী কোরবান আলী উত্তেজিত হয়ে গ্যাস লাইটার দিয়ে শারমিনের পরনে থাকা ম্যাক্সিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তাকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ঘরে তালাবন্দি করে রাখা হয়।
এদিকে, স্বামীর দেয়া আগুনে শারমিন বেগমের শরীরের পঞ্চাশ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে। এতে করে ঝলসে গেছে তার শরীরের বিভিন্ন স্থান।
গৃহবধূ শারমিনের স্বজনদের অভিযোগ, যৌতুকের জন্য তাদের মেয়েকে মারপিট করার পর শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পরে তাকে হত্যা করার উদ্দ্যেশ্যে ঘরে তালা দিয়ে রাখা হয়।
ঘটনার পর বিকেলে গৃহবধূর স্বজনরা এসে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে। পরে তাকে গুরুত্বর অবস্থায় সন্ধ্যার দিকে গাইবান্ধা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) পাঠায় চিকিৎসক।
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজার রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, সদর উপজেলার কাবিলের বাজার এলাকায় এক গৃহবধূর শরীরে আগুন দেয়ার কথা শুনেছি। ঘটনার সত্যতা জানার জন্য হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়।
তবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত থানায় কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।