শান্তি রানী সাহা। বয়স: ৪৫। গাইবান্ধা ব্রীজরোড কালিবাড়ী পাড়ার মৃত হরিপদ সাহার স্ত্রী তিনি। ২০১২ সালে হরিপদ সাহা মারা যান। এরপর তার একমাত্র কণ্যা সন্তান সাথীকে নিয়ে তার জীবন চলা। স্বামী মারা যাবার পর স্বামীর বাড়িতে ছোট একট্রি জরাজীর্ণ টিনের ঘরে বসবাস করার পাশাপাশি শোবার ঘরেই খাদ্য সামগ্রী সহ মানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি বিক্রি ও ঠোংগা বানিয়ে বিক্রি করে নিজের ও মেয়ের ভরনপোষণ চালানোর পাশাপাশি মেয়ের বিয়ে দেন। একমাত্র শোবার ঘরটির চাল ভাংগা। বর্ষাকালে ঘরে পানি পড়ে। ২০১২ সালে মেয়ে জামাই অপু সাহা মারা যাবার পর স্বামী হারা সন্তান সাথীকে নিয়েই তার পুনরায় জীবন চলা শুরু হয়। কিন্তু টাকার অভাবে মাল তুলতে না পারায় ও ঘড় ঠিক করতে না পারায় খুব কষ্টে দিনযাপন করছিল তারা।
এতে করে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ” অংকুর ফাউন্ডেশন” এর কর্মকর্তা তাদের খোজ পেয়ে উক্ত সংঘটন এর প্রতিষ্ঠাতা শায়েস্তাগীর চৌধুরীকে জানালে তার সহযোগীতায় গরিব অসহায় বিধবা মা শান্তি রানী সাহা ও বিধবা মেয়ে সাথী রানী সাহা উভয়কে আর্থিকভাবে সচ্ছল করে তুলতে তাদের ক্ষুদ্র ব্যবসাকে বড় করার লক্ষ্যে বুধবার বিকালে তাদেরকে ১০ হাজার টাকার দোকানঘরের উপকরণ ( পন্য) স্বরুপ ( চাল, ডাল,আলু,কাচামরিচ শ্যাম্পু, সাবান, ধুপকাঠি, কয়েল, চানাচুর, বিস্কুট, লবন, হলুদ, সয়াবিন তেল, সরষার তেল, পেয়াজ, রসুন সহ প্রায় ৫২ প্রকার সামগ্রী বিতরণ করেছে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ” অংকুর ফাউন্ডেশন” গাইবান্ধার কর্মকর্তা সুকমল মজুমদার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অংকুর ফাউন্ডেশন এর কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অশোক সরকার, রবীন চন্দ্র সাহা, সোনালী ব্যাংক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্বপন সরকার, সাংবাদিক সঞ্জয় সাহা সহ এলাকার মানুজন।
“সুবিধাভোগী বিধবা শান্তি রানী সাহা ও মেয়ে সাথী রানী সাহা” জানান- আমাদের মা ও মেয়ে উভয়ে খুব কষ্টে দিনযাপন করতাম। এখন আমরা অংকুর ফাউন্ডেশন থেকে আমাদের বসতঘরের দোকানের মাল পেলাম। এখন আমরা সচ্ছল ভাবে চলতে পারবো। আমরা যেন সামনের দিকে এগোতে পারি এজন্য আপনাদের নিকট আর্শীবাদ কামনা করছি। আমরা অংকুর ফাউন্ডেশন ও তার সদস্যদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
“অংকুর ফাউন্ডেশন গাইবান্ধার কর্মকর্তা সুকমল মজুমদার” বলেন- এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে সংগঠন এর প্রতিষ্ঠাতা শায়েস্তাগীর চৌধুরী বিভিন্নভাবে ফান্ড সংগ্রহ করে সমাজের দুস্থ, গরীব ও দুখী মানুষের চিকিৎসা, স্বাস্থ্য, লেখাপড়া, কর্মসংস্থান, ঘর তৈরি করে দেয়া সহ বিভিন্ন ধরনের কাজে সহযোগীতা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এই পাড়ায় দুইজন বিধবা মহিলা একটা ভাংগা ঘরে বসবাস করার খবর পাই যে- তারা এখানে বসবাস করে ও ঘরের চাল দিয়ে পানি পড়ে। এই ঘরে তারা ঠোংগা বানিয়ে ও কিছু মুদি দোকানের মাল বিক্রি করে কোনো রকমে কষ্ট করে সংসার চালান। তারা যেন আর্থিকভাবে সচ্ছল হয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি ব্যবসার লভাংশ দিয়ে তাদের ঘরটি ঠিক করতে পারে সে জন্য দোকানের মাল দিয়ে তাদেরকে সহযোগিতা প্রদান করলাম।
বিডি গাইবান্ধা/