গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে প্রতিবেশীর চোর-মাদকাসক্ত ছেলের সঙ্গে নাবালিকা বোনকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় ভাই বায়েজিদকে (৪) শিশু কে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (১৩ মে) রাতে শিশুর মা রায়হানা বেগম গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কাছে অভিযোগ করে বলেন প্রতিবেশী সূদের কারবারি সিরিকুলের ছেলে রোমান এলাকার একজন চিহ্নিত চোর। পাশাপাশি সে নেশায় আসক্ত। রোমানের পরিবারের পক্ষ থেকে আমার মেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তিশাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু এতে আমি রাজি না হওয়ায় রোমান বিভিন্ন সময় হুমকি দেয়।
এরই ধারাবাকিতকায় সে আমার ছেলে বায়েজিদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।এই দাবি করে দোষিদের ফাঁসির দাবি জানান তিনি।
সেই সঙ্গে পুলিশ সুপারের কাছে স্থানীয় হরিণাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিদর্শক বুলবুলের ভূমিকায় চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কামাল হোসেন ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় ইতোপূর্বে আটক দুইজন জেলহাজতে রয়েছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের লক্ষ্যে শনিবার রাতে অভিযুক্ত পরিবারের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার (১৩ মে) সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা বালুখোলা গ্রামের বিস্তীর্ণ একটি ধান ক্ষেত থেকে বায়েজিদের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত সিরিকুলের বসতবাড়িতে ভাঙচুরসহ আগুন দেয় বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী। পরে পলাশবাড়ী ও গাইবান্ধা ফয়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।পলাশবাড়ী থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত দিবাকর অধিকারী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান,
সোমবার (৮ মে) বিকেল ৩টার দিকে বাড়ির উঠান থেকে নিখোঁজ হয় উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা বালুখোলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী তাহারুল ব্যাপারীর ছেলে বায়েজিদ।পরদিন মঙ্গলবার (৯ মে) শিশুটির মা রায়হানা বেগম বায়েজিদের সন্ধানে পলাশবাড়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
চেষ্টা চালিয়েও শিশুটির কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে শনিবার বিকেলে স্থানীয় দুইজন ব্যক্তি ধান ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে শিশুটির অর্ধগলিত খণ্ডিত মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।