আজ মহান মে দিবস। শ্রমিক শ্রেণির লড়াই-সংগ্রামের ঐতিহাসিক দিন। ১৮৮৬ সালের এই দিনে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন ও রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে জীবনদানের ইতিহাস আজও অমলিন। সেই শহিদদের স্মরণে ও মালিকীব্যবস্থা থেকে শ্রমিকমুক্তির লক্ষ্যে আজও দেশে শ্রমিকরা তাদের দাবিতে এই দিনে মাঠে নেমে মিছিল-সমাবেশ করে। শোষণমূলক পুঁজিবাদী ব্যবস্থা উচ্ছেদের লক্ষ্যে এই দিন শ্রমিকদেরকে নতুনভাবে জাগিয়ে দিয়ে যায়।
এরই ধারাবাহিকতায় সারাদেশের ন্যায় গাইবান্ধায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান মে দিবস ২০২৩ উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপনে সোমবার সকালে জেলা প্রশাসনের আলোচনা সভা ও বিভিন্ন সংগঠন এর র্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসন ও শ্রম কল্যান কেন্দ্র গাইবান্ধার আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক অলিউর রহমান।
“তিনি বলেন- ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রনয়ণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সর্বপ্রথম তিনি শ্রমজীবী তৈরি করেছিলেন। শ্রমনীতি আজকে শ্রমিক ভাইদের জন্য। শ্রমিকদের দাবি আদায়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রম কল্যান ফাউন্ডেশন তৈরি করেছেন। ১৯৮৬ সালে যাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল তাদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন। তাদের সুবিচার তখনি হবে ও আত্নার শান্তি পাবে যখন তাদের অধিকার আদায়ের দাবি বাস্তবায়িত এবং আমরা করতে পারি তবেই। আজকে যে পদ্মা সেতু তৈরি হয়েছে তা শ্রমিক ভাইদের জন্য। বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে শ্রমিক ভাইদের জন্য। শ্রমিক ভাইয়েরা কাজ না করলে স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি হতো না। শ্রমিক ভাইদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা থাকা প্রয়োজন।”
বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন- গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগ গাইবান্ধা জেলা শাখার সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক সিভিল সার্জন প্রতিনিধি ,ডা: সোহেল মাহমুদ,
গাইবান্ধা পৌরসভার প্যানেল মেয়র শহীদ আহমেদ, প্রেসক্লাব গাইবান্ধার সভাপতি কে,এম রেজাউল হক।
“পুলিশ সুপার বলেন- সামনের সাড়িতে যারা বসে আছেন এদেরকে নিয়ে সমাজ নয়। সমাজ হলো- শ্রমজীবী, পেশাজীবি, মুচি, ড্রাইভার এদেরকে নিয়ে সমাজ। শ্রমিকরা যদি কাজ না করত তাহলে বাংলাদেশের উন্নয়ন হত না। মুচিরা যদি জুতা কালি না করত তাহলে আমরা চলতে পারতাম না, ড্রাইভার যদি গাড়ি না চালাতো তাহলে আমরা গাড়িতে চড়তে পেতাম না। কাজেই সভ্যতা বিনিমার্ণে একই প্লাটফর্মে থেকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”
গাইবান্ধা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) সুশান্ত কুমার মাহাতো’র সভাপতিত্বে ও সংগঠক শিরিন আক্তার এর সঞ্চালনায় মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন- শ্রম কল্যান সংগঠক মো: নাসির উদ্দীন, গাইবান্ধা জেলা শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি আব্দুল করিম, শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন ও জেলা কোচ, বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি আশরাফুল আলম বাদশা, সাধারণ সম্পাদক জামিলুর রহমান জামিল, দোকান কর্মচারী শ্রমিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক ও শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল সাহা, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ সাধারণ সম্পাদক রোস্তম আলী প্রমুখ।
এর আগে বিভিন্ন সংগঠন এর র্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এসে আলোচনা সভায় যুক্ত হন। র্যালি কর্মসূচিতে অংশ নেন- জেলা কোচ, বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন, গাইবান্ধা নির্মান শ্রমিক ইউনিয়ন, গাইবান্ধা গরু গাড়ী কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন। এর নের্তৃত্ব দেন সংগঠন এর সভাপতি রেজাউন্নবী রাজু, জেলা মটর সাইকেল মেকানিক্স ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন সংগঠক।
বিডি গাইবান্ধা/