গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় রানী আকতার (২২) নামের এক সেনা সদস্যের স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ তার পিত্রালয় থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার সকালে খবর পেয়ে থানা পুলিশ উপজেলার নলডাঙ্গা( টুপামারী) গ্রামের বাবার বাড়ির রান্না ঘরের তীরের সাথে গলায় ওঁড়না পেঁচানো রানী আকতারের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। মৃতা রানী আকতার ওই গ্রামের দুবাই প্রবাসী আংগুর মিয়ার মেয়ে।
সাদুল্লাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ প্রদীপ কুমার রায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব জ্যোর্তিময় গোকসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এসময় থানার উপপরিদর্শক তাহসীন লাশের সুরাতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মৃতার পরিবারের বরাত দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তাহসীন বলেন, রানীর স্বামী মোজাম্মেল হক একজন সেনা সদস্য।বর্তমানে তিনি কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত আছেন।তিনি হঠাৎ শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু স্বামীর অসুস্থতার কথা তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে না জানায় রাগে ক্ষোভে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করেছেন। তাদের ৬ মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান আছে।
স্থানীয়রা জানান,দুই আড়াই বছর আগে একই উপজেলার ভাঙ্গামোড় চান্দের বাজার এলাকার মোশারফ হোসেনের ছেলে সেনাসদস্য মোজাম্মেল হোসেনের সাথে রানী আকতারের প্রেমসুত্রে বিয়ে হয়।
স্বামীর চাকুরীর সুবাদে শ্বশুরবাড়ি ও পিত্রালয়ে দুইখানেই থাকতেন রানী আকতার।সপ্তাহখানেক আগে ঈদ মার্কেট করার জন্য রানী আকতার বাবার বাড়িতে এসে নিজের ও শ্বশুর শ্বাশুড়ীর জন্য ঈদ মার্কেট করেন। রানী আকতারের চাচা সুরুজ বাঙালী বলেন ৫/৬ মাস আগে সিজারিয়ানের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন রানী। এরপর থেকে রানী আকতার খিটখিটে মেজাজের ও অনেকটা জেদি হয়। আমাদের ধারনা রাগ ও জেদ থেকেই রানী আত্নহত্যা করতে পারেন।
রানীর মা ও দাদী বলেন,কয়েকদিন থেকে রানী খাওয়া নাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। ঠিকমতো কারো সঙ্গে কথাও বলে না।সবসময় কি জানি চিন্তা করতো। কোনকিছু বললে শুধু রাগারাগি করে। ঘটনার দিন কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে চুপিসারে পাকের ঘরের দরজা বন্ধ করে ধর্নার সাথে গলায় ওঁড়না পেঁচিয়ে গোঙাতে থাকে রানী। এসময় তার গোঙানীর শব্দ শুনে চিৎকার দিয়ে উঠি। আমাদের চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন দৌঁড়ে এসে রান্না ঘরের দরজা ভেঙে ধর্নার সাথে গলায় ওঁড়না পেঁচানো ফাঁসে ঝুলানো রানীর নিথর দেহ তড়িঘড়ি করে নামিয়ে ফেলে।