গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কঞ্চিবাড়ী ইউনিয়ের সতীরজান মিয়া পাড়া গ্রামের(৬ নং ওয়ার্ড) মোনোয়ার মিয়ার পুত্র ফুল বাদশা (৩০) এর গর্ভবতী স্ত্রী নাছিমা বেগম (২৩) এর সঙ্গে তার প্রতিবেশি আবুল কালাম আযাদ( ৪৫) এর স্ত্রী গোলেজান (৩৫) ও মেয়ে আশা মনির সাথে পাশ্ববর্তী ঈদগাহ মাঠে গাছের শুকনো পাতা রান্নার কাজে ব্যবহারের জন্য কুড়াতে গেলে গাছের পাতা জড়ো করাকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের আবুল কালাম এর স্ত্রী গোলেজান ও তার মেয়ে আশা মনির সাথে ফুল বাদশার গর্ভবতী স্ত্রী নাছিমা বেগমের কথার কাটাকাটি হয়। একটা পর্যায়ে আবুল কালামের স্ত্রী গোলেজান ও মেয়ে আশা মনি বাঁশের ঝাঁড়ু দিয়ে নাছিমাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে উক্ত স্হান থেকে চলে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৬ মার্চ ২০২৩ ইং এ। জানা যায়, মারামারির পরেই গর্ভবতীর পেট ব্যথা শুরু হয়। পেট ব্যথা চলতে থাকলে ১৮ মার্চ তাকে গাইবান্ধায় ডাঃ এর কাছে নিয়ে যায়। রোগীর অবস্হার বেগতিক দেখে আলট্রাসনোগ্রাম করে ডাঃ নিশ্চিত হয় তার পেটের বাচ্চা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে এবং বাচ্চার শ্বাস প্রশাসের সমস্যা হচ্ছে। এমতাবস্থায় রোগীকে বাড়ি নিয়ে আসলে ২০ মার্চ রোগীর রক্তপাত শুরু হয় এবং আবারও গাইবান্ধা মাদার কেয়ার ক্লিনিকে ভর্তি করায়। চিকিৎসাকালীন অবস্হায় রোগীর শারীরিক অবস্হার অবনতি হলে গত বৃহস্পতিবার ডাঃ নিশ্চিত করেন তার গর্ভের সন্তানের অবস্হা ভালো নেই এবং ঐদিন রাত ২ টায় মৃত অবস্থায় বাচ্চাটি প্রসব করে। বাচ্চারটি জন্মের পরে তার শরীরে অনেক ক্ষত চিহ্ন ও আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্হলে উপস্হিত হই এবং বাচ্চাটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন ও ক্ষত চিহ্নসহ মৃত্যু অবস্হায় দেখতে পাই এবং প্রতিবেশিদের মতামত ও ঘটনার কারণ জানতে পাই। প্রতিবেশিদের দেওয়া তথ্যমতে, আশামনির মা দোষ স্বীকার করে বলেন, আমি ঝাঁড়ু দিয়ে মারিনি আমার মেয়ে আশা মেরেছে। প্রশাসনের সুনজরে দিতে তাৎক্ষনিকভাবে সুন্দরগঞ্জ থানা ডিউটি অফিসারকে বিষয়টি জানাই। কর্তব্যরত অফিসার একটি লিখিত অভিযোগ চাইলে তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যু বাচ্চার অভিভাবককে লিখিত অভিযোগ দিতে বলি। শিশু মৃত্যুর এই বিষয়টি সম্পর্কে আবুল কালাম আযাদ এর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। সমাজ ব্যবস্হা কতোটা নির্দয় ও নির্মম হলে এটি হতে পারে ? বাচ্চাটি মৃত্যুর ২৪ ঘন্টা পরে পুলিশ প্রশাসন বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় এবং ২৫ মার্চ বাচ্চাটির সুরতহাল করার জন্য ময়না তদন্তে গাইবান্ধায় প্রেরন করেন। বিষয়টি সম্পর্কে সুন্দরগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ আজমিরুজ্জামান এর সাথে কথা হলে তিনি জানান,বাচ্চাটি ময়না তদন্তের জন্য গাইবান্ধায় প্রেরন করেছেন এবং বলেন এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাননি, অভিযোগ পেলে এবং সুনির্দিষ্ট প্রমাণ মিললে আইনগত ব্যবস্হা নেওয়া হবে।