গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলা মনোহরপুর ইউনিয়ন ঘোড়াবান্দা (দখিনপাড়া) গ্রামের হাজেরা বেগম( বয়স ৬৫) বছর পার হলেও হয়নি কোন আশ্রয় ঠিকানা । তার নিজের কোনো জমি নেই। নেই থাকার মতো কোনো ঘর। নিভৃত পল্লীর এই স্বামী পরিত্যাক্ততা মহিলা বেশির ভাগ সময় থাকেন অন্যের ঘরে।
সেখানে জায়গা না হলে, ঠাঁই মেলে মানুষের বারান্দায়। ৬৫ বছর অতিবাহিত হলেও” মাথা ঘোজাঁর ঠাঁই মেলেনি হাজেরার
জীবনের শেষ সময়ে এসে যখন তার মতো বয়সে আরাম আয়েসে নাতি-নাতনির সঙ্গে হেসে-খেলে সময় পার করবেন, ঠিক তখন রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে স্বামী পরিত্যাক্ততা হাজেরাকে সীমাহীন কষ্ট ভোগ করতে হয়। থাকতে হয় অন্যর বাড়ি বাড়ি গিয়ে। ঠাঁই মেলে ঝিয়ের কাজের বিনিময়ে আশ্রয়।
এমনই বিদারক ঘটনা গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা মনোহর পুর ইউনিয়ন ঘোড়াবান্ধা গ্রামে(দখিনপাড়া)।
অসহায় পরিত্যাক্ততা বিধবা মহিলা
তিনি ওই গ্রামের মৃত ছাতু ফকির মেয়ে স্বামী পরিত্যক্ত হাজেরা বেগম ।প্রায় ৬০ বছর হলো স্বামী পরিত্যক্ত হাজেরা বাবার বাড়ি থেকে অন্যর বাড়ি ঝিয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
এক ছেলে থাকলেও তার সাথে কোনদিন দেখা করেনি ছেলে । যাযাবরের মতো এখানে ওখানে মানুষের বাড়ি থেকে ধুঁকে ধুঁকে জীবন চলছে তার। তাই জীবন সায়াহ্নে এসে সরকারের কাছে তার দাবি ছোট্ট একটি ঘরের।
অসহায় স্বামী পরিত্যক্ত হাজেরা জানান, অভাব তার জীবনে নিত্যসঙ্গী। অভাবের কারণে তিনি জীবনে অনেক কিছুই স্বামী সংসার হারিয়েছেন। সেসব কষ্ট ভোলার নয়। সংসারে সব সময় অভাব-অনটন লেগে থাকায় তার স্বামী তালাক দেন ।
পরে আবার অন্য জায়গায় বিয়ে হয়। টাকা জিনিস -পত্র দিতে না পাড়ায় সৌভাগ্য হয়নি সংসার করার।
বিয়ের ৫ বছর পর বাবা মা জোর করে তৃতীয় বিয়ে দিলেও সে সংসারও টিকেনি। কারন স্বামী যৌতুক দাবি করলে দিতে না পাড়ায় সেখানেও তার কপাল পুড়ে।
কারণ একটাই অভাব পিছু ছাড়েনি
হাজেরার আশ্রয় হয় বাবার বাড়ি। তারপর হাজেরার বাবা -মায়ের মৃত্যু হয়।
এরপর দিশেহারা হয়ে পড়েন। জীবন -যুদ্ধে সংসার করতে যেটুকু ঠাঁই ছিল অভারে কারনে মাথা ঘোঁজার ঠাঁইটুকু হারিয়েছেন।
পরে অন্যর বাড়ি বাড়ি ঝিয়ের কাজ করতেই কেটে যায় ৫ যুগ”
আরও জানান,প্রায় ৬০ বছর পাড় হলেও নিজের ভিটেমাটি তো দূরের কথা ভালো করে সংসারই করতে পারেননি তিনি। বিপদে যাদের আকরে ধরে বাঁচতে চেয়েছেন তারাই দূরে চলে গেছে।
এখন কোনো রকমে ঘোড়াবান্দা /তালুক-ঘোড়াবান্দা গ্রামে বিভিন্ন বাড়িতে থাকেন। কোনো কোনো সময় থাকতে হয় বারান্দায় । কিন্তু এই যাযাবর জীবন তার ভালো লাগে না, শেষ বয়সে একটা ঘর চান তিনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, দু’বেলা খাবারের সন্ধানে ছুটাছুটির চেষ্টা করেন। কিন্তু তেমনভাবে আগের মতো শারীরিক পরিশ্রম আর করতে পারেন না। সারাদিন এখানে সেখানে কাটালেও রাত আসলে কোথায় ঘুমাবেন সেই ঠিকানা খুঁজে বেড়ান হাজেরা ।
এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। ব’লেন ৬৫ বছর পার করনুম মরার আগে শান্তি করে থাকার যদি কেউ আশ্রয় করে দিতো এরকম অসহায় স্বামী পরিত্যক্ত হাজেরা
ঘর পাওয়ার যোগ্য কি না।
এ বিষয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান সাথে কথা বললে তিনি বলেন। এইরকম যদি হয় তাহলে অবশ্যই তিনি সবার আগে ঘর পাওয়ার যোগ্য। তিনি এই প্রতিবেদক কে বলেন তিনি আবেদন করুক যাচাই-বাছাই চলছে অবশ্যই তার বিষয় গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। এছাড়াও হাজেরা বেগম
প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরের দাবি জানান।