গত ২০ জানুয়ারি, শুক্রবার জেলা প্রশাসন, গাইবান্ধা ও সেভ দ্য চিলড্রেন এর সহযোগিতায় গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের অভ্যন্তরে গুপ্তমনির চরে কিশোর-কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জাতীয় পর্যায়ে শিশু অধিকার বাস্তবায়নকারী শিশু সংগঠন ন্যাশনাল চিলড্রেন’স টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ) গাইবান্ধা জেলা কমিটির আয়োজনে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন এনসিটিএফ বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও গাইবান্ধা জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি কে.এইচ খান রোহান।
ক্যাম্পেইনে এনসিটিএফ গাইবান্ধা জেলা কমিটির সভাপতি নুশরাত জামান লামিয়া এর সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক বক্তব্য রাখেন সেভ দ্য চিলড্রেন এর ফিল্ড অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান সৈকত।
ক্যাম্পেইনে কিশোর-কিশোরীদের মাঝে বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন, প্রজনন স্বাস্থ্যসুরক্ষা ও এই সময় করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করেন এনসিটিএফ সদস্যরা। পরে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের এর সহযোগিতায় ৫০ জন কিশোরীকে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরন করা হয়।
ক্যাম্পেইন পরিচালনা ও বাস্তবায়নে আরও উপস্থিত ছিলেন সেভ দ্য চিলড্রেন এর জেলা ভলান্টিয়ার ও ইয়ুথ মেন্টর গ্রুপের সদস্য মোঃ মশিউর রহমান মুছা, এনসিটিএফ গাইবান্ধা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আদিত প্রধান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হাসান লিখন, সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াসফিয়া নুভা, চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্য জাহিদ আহসান ও ফাইরুজ লুবনা, শিশু গবেষক উম্মে তাবাচ্ছুম তুবা অথৈ, শিশু সাংবাদিক মারজান, সাধারণ সদস্য ফাহমিদা সারা, ইয়ুথ মেন্টর গ্রæপের সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ তাওফিক ওমর হিমন, সাবেক কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আসফিকুর রহমান আসিফ, আনাস আহম্মেদ সাদ, অনিক বর্মণ, সাফা মারিয়া অর্পা, মেহেদী হাসান প্রমূখ
উল্লেখ্য যে, এনসিটিএফ জাতীয় পর্যায়ের একটি শিশু সংগঠন যা শিশুদের দ্বারা গঠিত ও পরিচালিত। বাংলাদেশ সরকার এনসিটিএফ গঠনের প্রথম পদক্ষেপ গ্রহণ করে ২০০৩ এর সেপ্টেম্বরে এবং এনসিটিএফ কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয় ২০০৫ এর জানুয়ারিতে। যদিও এনসিটিএফ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল যৌন নির্যাতন, বঞ্চনা ও পাচার বিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি পরিবীক্ষণ (মনিটরিং) করার জন্য, কিন্তু পরবর্তীতে এনসিটিএফ-এর ভূমিকা পরিবর্তিত হয়ে বর্তমানে সমগ্র দেশের শিশু অধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, মনিটরিং করা এবং পরবর্তীতে তা নিয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এ্যাডভোকেসি করাই হচ্ছে এনসিটিএফ এর প্রধান কাজ।
এনসিটিএফ এর লক্ষ্য হল, জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ অনুযায়ী বাংলাদেশের শিশুদের সকল অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং বাংলাদেশকে একটি শিশুবান্ধব দেশ হিসেবে গড়ে তোলা।
এছাড়াও এনসিটিএফ সদস্যরা শিশু অধিকার সনদ কতুটুকু বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং তার অগ্রগতি কী তা (তৃণমূল, স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে) নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিং করে। শিশু যৌন নিপীড়ন, শোষণ এবং শিশু পাচার-এর বিরুদ্ধে সরকারের গৃহীত জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে কিনা তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিং করে। সর্বস্তরে শিশুদের বৈষম্যহীন অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি ও শিশুদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বড়দের সাথে নানা কাজে শিশুদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং পলিসি পরিবর্তনে উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং শিশু অধিকার বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে দায়িত্বশীল ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গকে শিশু অধিকার পরিস্থিতি বিষয়ে অবগত করে থাকে।