সংবাদ প্রকাশের জেরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকাপোস্টডটকম-এর সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার ও গাইবান্ধা প্রতিনিধি রিপন আকন্দের নামে চাঁদাবাজি ও আইসিটি আইনে মামলার প্রতিবাদে জরুরি বৈঠক করেছেন জেলার সাংবাদিকরা। এ সময় হয়রানিমূলক মিথা মামলার ঘটনায় কড়া সমলোচনা, প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়।
রবিবার (৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রেসক্লাব গাইবান্ধা কার্যালয়ে এই জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।প্রেসক্লাব সভাপতি খালেদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাভেদ হোসেনের সঞ্চালনায় জরুরি সভায় প্রেসক্লাব গাইবান্ধার সকল সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জরুরি বৈঠকে সাংবাদিকরা রামচন্দ্রপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোসাব্বিরের দায়ের করা মিথ্যা মামলার কড়া সমালোচনা, প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। একই সঙ্গে এই মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতীকী অনশনসহ তিনটি কর্মসুচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় গাইবান্ধা শহরের গানাসাস মার্কেটের সামনে ডিবি রোডে মানববন্ধন কর্মসূচি, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের বরাবর স্বারকলিপি প্রদান এবং আগামী রোববার বেলা ১১টায় থেকে প্রেসক্লাব গাইবান্ধা (গোরস্থানমোড়) কার্যালয়ের সামনে আধাবেলা সাংবাদিকদের প্রতীকী গণঅনশনসহ কলম-ক্যামেরা বিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এছাড়া জরুরি বৈঠকে প্রেসক্লাব গাইবান্ধার সহ-সভাপতি রবিন সেনের নামে মামলারও নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
গত ১৬ নভেম্বর “ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মসজিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে ঢাকাপোস্টডটকম। মসজিদ সংস্কারের সরকারি অর্থ চেয়ারম্যান মোসাব্বির আত্মসাৎ করার বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে এলাকায় বেশ চাঞ্চ্যল্যের সৃষ্টি হয়। ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
এমন দুর্নীতির ঘটনা ধামাচাপা দিতে গত ৮ জানুয়ারি রংপুরের সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে চাঁদাবজি ও আইসিটি আইনে মিথ্যা মামলা করেন চেয়ারম্যান মোসাব্বির। মামলায় ঢাকাপোস্টডটকমের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার, গাইবান্ধা প্রতিনিধি রিপন আকন্দকে আসামি করেন তিনি।
প্রসঙ্গত : ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) সাধারণ এর দ্বিতীয় পর্যায়ের উপজেলা ভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের রোস্তমের মোড়ে অবস্থিত নূরে রহমত জামে মসজিদের নামে বরাদ্দ হওয়া টিআর এর ৫৫ হাজার টাকার মধ্যে মসজিদ কমিটির হাতে মাত্র ১৪ হাজার টাকা দিয়ে বাকি ৪১ হাজার টাকা প্রকল্প সভাপতি মহিলা সদস্যের স্বামী মাহবুর রহমান, ছয় ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যান মোসাব্বির ভাগবাটোয়ারা করে নেন।
এছাড়া ইউনিয়নের অপর একটি প্রকল্প “জগৎরায় গোপালপুরের জাবালে রহমত জামে মসজিদের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৫৭ হাজার টাকা। ইউপি চেয়ারম্যান মোসাব্বির ওই মসজিদ কমিটির সভাপতি আবুল হোসেনকে প্রকল্প সভাপতি বানিয়ে মসজিদে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে বাকি ৩২ হাজার টাকা একাই আত্মসাৎ করেন।