চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী পরিবারের অত্যাচারে চরাঞ্চলের মানুষ অতিষ্ঠ, আইনগত সহযোগীতা চান তারা।
গত রবিবার গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার এড়েন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের সন্ন্যাসীর চরে গিয়ে জানা যায়,
হাফেজ হেদায়েতুল্লা ও রহমত আলী (রহমতুল্লাহর) এবং তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যাবসা চালিয়ে আসছে। আর তাদের মাদক ব্যবসায় বাঁধা দিলে এলাকার সাধারন জণগনের উপর নেমে আসে অত্যাচার। যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে এলাকাবাসীর আয়োজনে এক সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগে জানাযায়, গত ০৩ নভেম্বর দুপুর ০১.৩০ মিনিটে আব্দুল মান্নান মিয়া গাইবান্ধা জেলা জজ আদালতে একটি মামলায় সাক্ষ্য দিতে যায়। সেদিন সাক্ষ্য গ্রহণ না হওয়ায় পরিবারসহ বাসায় ফেরার পথে হেদায়েতুল্লা ও রহমত আলীগং (পূর্বে মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেয়ার অপরাধে) আদালত চত্বর থেকে মান্নান মিয়াকে অপহরন করে আটক রেখে মারধর করে ও মুক্তিপণ দাবি করে। পরে অপহারনকারীকে কিছু মুক্তিপণ দিয়ে সেখান থেকে উদ্ধার পেয়ে গাইবান্ধা সদর থানায় গিয়ে একটি অভিযোগ দিলে থানা পুলিশ ঐদিনেই ৩ অপহরনকারীকে আটক করে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অপহরণের স্বীকার মৌলভি মান্নান মিয়া বলেন, এলাকায় মাদকের ব্যবসা করে হেদায়েতুল্লা ও রহমত আলী (রহমতউল্লা) এবং তাদের পরিবার। ইতিপূর্বে রহমত আলী দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাদকসহ অনেক বার আটক হয়েছেন। সে মাদক মামলায় আটক হওয়ার পর জামিনে ফিরে এসে একই কাজে লিপ্ত হয়। এমন জঘন্য তম কাজে বাধা দেয়ায় সে এবং তার দলবল নিয়ে ঘটনার দিন ৩ নভেম্বর আমাকে ধরে নিয়ে আটক রেখে মারধর করে। পরে মুক্তিপন দাবি করে। আমি গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশের সহযোগিতায় অপহরনকারীদের হাত থেকে বেঁচে যাই।
তিনি আরো বলেন, হেদায়েতুল্লা ও রহমত আলী (রহমতুল্লাহ) এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও চুরি ছিনতাই পেশার সঙ্গে জড়িত।
এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম বলেন, রহমতুল্লাহ ও তার পরিবারের লোকজন গাইবান্ধার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার মা বিভিন্ন সময় মাদকের চালান বহন করে। ইতিপূর্বে রোগী সেজে মাদকের একটি চালান পার করার সময় এলাকাবাসীর হাতে আটক হন হেদায়েতুল্লা ও রহমত আলীর মা।
হেদায়েতুল্লা ও রহমতুল্লাহর আপন বড় চাচা আলহাজ্ব আমির হোসেন বলেন, আমার ভাইসহ ভাতিজারা বিভিন্ন সময় আমাকে মোবাইল ও প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়েছে। আমি এদের পরিবারে অত্যাচারে অনেক কষ্টে বেঁচে আছি। আমার সন্তানাদি নাই, আমি এলাকার গরিব মানুষের এতিম ছেলে মেয়েদের বাড়িতে এনে অনেকের বিয়ে দিয়েছি। এরা ইতোমধ্যে আমার এক একর জমি বেদখল দিয়েছে, এখন আমার থাকা অন্য জমিগুলোতে আমাকে নামতে দিচ্ছে না। আমি এদের বিচার চাই।
পল্লী চিকিৎসক আবুল কালাম অভিযোগ করে বলেন, রহমতুল্লাহ ও তার পরিবারের লোকজন অনেক দাঙ্গা বাজ তাদের জন্য আমরা অনেকেই ভয়ের মধ্যে আছি। তারা আমার ক্রয়কৃত ৯৫ শতাংশ আবাদি জমি দখল করে নিয়েছে, এখন আবার বলে তোর সব কিছু নেবো তুই কিছুই করতে পারবি না।
এসময় আল আমিন, পল্লী চিকিৎসক খলিল, আসাদুজ্জামান বাবু, কউছার আলীদের সাথে কথা বলে জানাযায়, হেদায়েতুল্লা, রহমতুল্লাহ ও তার পরিবারের লোকজন সবাই ইয়াবা ব্যবসার সাথে জরিত। ইতিপূর্বে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী থানায় রহমত উল্লার বিরুদ্ধে ২০৫ পিচ ইয়াবা বহনের দায়ে একটি মামলা, কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর থানায় ৮৩০ পিচ ইয়াবা বহনের দায়ে ২৯( ডিসেম্বর) ২০২০সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা, কুড়িগ্রামের রৌমারী থানায় ১৯৭ পিচ ইয়াবা বহনের দায়ে একটি মামলাসহ জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ থানায় নারী শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা হওয়ার খবর জানি। এছাড়াও তাদের নামে বিভিন্ন থানায় প্রায় ১০ টি মামলা চলমান রয়েছে। হেদায়েতুল্ল্যা বলে ১০ মামলা হয়েছে তাতে কি হয়েছে আমাদের আরো ১০ টা হবে তারপরেও মান্নান মৌলভি কে দেখে নিবো।
এ বিষয়ে জানতে ফুলছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ কাওসার আলীকে ফোন দিলে তিনি বলেন, রহমতুল্লাহর নামে ফুলছড়ি থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গত ১১ (নভেম্বর) শুক্রবার থানায় রহমতুল্লাহর আপন বড় চাচা একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।