জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সতেরো বছর পূর্তি এবং আঠারো বছর পদার্পণ উপলক্ষে ২০ অক্টোবর দিনব্যাপি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে করা হলেও বছর পূর্তি অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই কোন কনসার্টের আয়োজন। এছাড়া সরকারি নিয়মে আলোকসজ্জায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু অংশ সজ্জিত হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ১৮৫৮ সালে ঢাকা ব্রাহ্ম স্কুল নামে এর প্রতিষ্ঠা হয়। ১৮৭২ সালে এর নাম বদলে জগন্নাথ স্কুল করা হয়। মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটির জমিদার কিশোরীলাল রায় চৌধুরী তার বাবার নামে জগন্নাথ স্কুল নামকরণ করেন। ১৯০৮ সালে এটি প্রথম শ্রেনীর কলেজে রুপান্তর হয়। ১৯২১ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে জগন্নাথ কলেজে স্নাতক কার্যক্রম বন্ধ করা হয়।
পুরানো ঢাকার নারী শিক্ষায় বাধা দূর করতে সহশিক্ষা চালু করা হয়। কলেজটি ১৯৬৮ সালে সরকারিকরণ হলেও পরবর্তী বছরেই বেসরকারি মর্যাদা লাভ করে। বাংলাদেশ শুরুর লগ্য থেকে জগন্নাথ কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক বিভিন্ন আন্দোলন অংশ করেন৷ এছাড়া মহান মুক্তিযুদ্ধে জগন্নাথ কলেজের অনেক শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক নিহত হন। যুদ্ধ শেষে এখানে গণ কববের ও সন্ধান মেলে।
২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাশের মাধ্যমে জগন্নাথ কলেজকে পুর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে মোট ছয়টি অনুষদের অধীনে ৩৬ টি বিভাগের ও ২টি ইন্সিটিউটের মাধ্যমে এখানে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় জন্মক্ষণ হিসেবে ২০ ই অক্টোবর ধরে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হয়ে আসছে। আসন্ন ২০ ই অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সতেরো বছর পুর্তি এবং আঠারোতে পদার্পণ হতে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) উপাচার্যের আদেশক্রমে রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামানের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন আয়োজনের কথা জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, 20 অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানের সময়সূচিতে বলা হয়, সকাল নয়টা ঘটিকায়, উপাচার্য মহোদয় কে বিএনসিসি কতৃক গার্ড অব অনার প্রদান। সকাল নয়টা দশ মিনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশন। উত্তোলনের একটু পর বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভ উদ্বোধন করবেন মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক। সকাল নয়টা বেজে পঁচিশ মিনিটে প্রকাশনা উৎসব এর শুভ উদ্বোধন শেষে আনন্দ র্যালি শুরু।
র্যালি জবি হয়তে রায় সাহেব বাজার দিয়ে ভিক্টোরিয়া পার্ক ঘুরে জবিতে অবস্থান করবে। র্যালি শেষে বার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনী শুভ উদ্বোধনের পরপরই কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে শুরু হবে তাসের দেশ নাটক পরিবেশনা।
দুপুরের পরবর্তী সময়, শিক্ষার্থীদের নিয়ে, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের নিয়ে এবং জবির বিভিন্ন সংগঠনের ব্যান্ডদল নিয়ে মুজিব মঞ্চে স্বল্প পরিসরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন হবে।
পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উৎযাপন হলেও শিক্ষার্থীদের বিনোদনের জন্য কোন কন্সার্টের আয়োজন হবেনা বলে জানান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মোস্তফা কামাল।
এছাড়া আলোক সজ্জার ব্যাপারে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, শহীদ মিনার এবং বিশ্ববিদ্যালয় দু’ফটক স্বল্প পরিসরে আলোকসজ্জায় সজ্জিত হবে।
অনুষ্ঠান যত দ্রুত সম্ভব শেষ করতে হবে বলে তিনি জানিয়েছ।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠান উপলক্ষে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে আমাদের বিনোদনের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ এটা প্রশাসনের ঠিক হয়নি, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে নাচ-গানের কন্সার্ট আমাদের প্রাপ্য।