শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাষ্টমীতে উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গাইবান্ধা শহরের ব্রীজরোড দুর্গাবাড়ি মন্দিরে কুমারী পূজা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ আশ্রম গাইবান্ধার আয়োজনে সোমবার অষ্টমী তিথিতে দুর্গাবাড়ি মন্দিরে সকাল ১১টায় কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমে সকালে ভক্তপ্রান দাদা, মা ও শিশু কিশোররা অষ্টমীর অঞ্জলি প্রদানে মন্দির প্রাঙ্গনে ভীড় করে সমবেত হয়ে মা দুর্গার চরণে ফুল বেলপাতা প্রদান করে।
শঙ্খ, উলুধ্বনি আর ঢাকের তালে আনন্দে মেতে ওঠে সকলে। আরাধনা করা হয় দেবী দুর্গার। হয় সন্ধি পূজা। এ উপলক্ষে গাইবান্ধা ব্রীজরোড দূর্গাবাড়ী মন্দিরে ধর্মপ্রাণ নারী-পুরুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে।
অন্যান্য ধর্মালম্বী মানুষও কুমারী পূজা দেখতে মন্দির প্রাঙ্গনে ভীড় জমায়। শহরের পূর্বপাড়া লোন অফিস এলাকার বাসিন্দা প্রিন্স চক্রবর্ত্তীর মেয়ে প্রিয়ন্তি চক্রবর্ত্তী (১১) কে নতুন বস্ত্রে দেবী সাজে সজ্জিত করে দেবী জ্ঞানে পুজা অর্ঘ্য নিবেদন করা হয় শ্রী রামকৃষ্ণ আশ্রমে। প্রিয়ন্তি লালমনিরহাট জেলার মদনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। পূজা চলাকালে মুহুর্মুহু উলু ও শঙ্খধ্বনী বেজে উঠে। পুজা অনুষ্ঠানে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
কুমারী পূজায় পৌরোহিত্য করেন মন্দিরের ব্রাহ্মণ দিলীপ চক্রবর্তী।
পুরোহিত দিলীপ চক্রবর্তী ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলেন, কুমারী আদ্যাশক্তি মহামায়ার প্রতীক। দুর্গার আরেক নাম কুমারী। কুমারীরা শুদ্ধতার প্রতীক হওয়ায় মাতৃরূপে ঈশ্বরের আরাধনার জন্য কুমারী কন্যাকে নির্বাচিত করা হয়। মূলত নারীর যথাযথ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করতে কুমারী পূজা করা হয়। মাটির প্রতিমায় যে দেবীর পূজা করা হয়, তারই বাস্তবরূপ কুমারী পূজা। দুর্গাপূজায় কুমারী পূজা হলো অশুভ, অন্যায়, পাপ পঙ্কিলতার বিরুদ্ধে ন্যায়, পূর্ণ, সত্য, শুভ ও সুন্দরের যুদ্ধ। কুমারী প্রতীকে জগজ্জননীর পূজায় পরম সৌভাগ্য লাভ হয়। এই রূপ কুমারী সমগ্র জগতের বাক্যস্বরূপা, বিদ্যাস্বরূপা। তিনি এক হাতে অভয় এবং অন্যহাতে বর প্রদান করেন।
শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান হিসাবে বক্তব্য রাখেন- গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক অলিউর রহমান।
বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ, পৌর মেয়র মতলুবর রহমান, ব্রীজরোড দুর্গাবাড়ি মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিলাদ্রী সরকার।
সভাপতিত্ব করেন- রামকৃষ্ণ আশ্রম গাইবান্ধার সভাপতি চন্দ্র শেখর দাস।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন- কবি দেবাশীষ দাস দেবু। এ সময় রামকৃষ্ণ আশ্রম গাইবান্ধার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে গীতা পাঠ করেন যামিনী রঞ্জন সেন।
শেষে ভক্তদের মাঝে খিচুড়ি প্রসাদ বিতরন করা হয়।