নীলফামারীর ডিমলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া নাম সর্বস্ব লাইফ কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।তবে অবাক করা বিষয় হলো ডা. আকতারুজ্জামান বাবু নামের নন বিসিএস এমবিবিএস এক চিকিৎসক সিজারিয়ানে নিজেই সার্জারি ও এনেসথেসিয়া করে রেজিস্টার খাতায় নন বিসিএস-এমবিবিএস চিকিৎসক স্ত্রীর নামে স্বাক্ষর করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছেন।
জানা গেছে,গত বুধবার(২১ সেপ্টেম্বর)বিকেলে উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ খড়িবাড়ি মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা আতাউর রহমানের স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তানের জননী রহিমা বেগম উপজেলা সদরের আলম প্লাজা মার্কটের পিছনে অবস্থিত নাম সর্বস্ব অবৈধ লাইফ কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজার করতে এসে সেখানে ভর্তি হন।পরে বিকেল পাঁচটায় দিকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের ডাকে চুক্তিবদ্ধ চিকিৎসক নন বিসিএস এম.বি.বি.এস(আর.ইউ),
পি.জি.টি(সার্জারি),এক্স এইচ.এম ডা. আকতারুজ্জামান বাবু সেখানে হাজির হওয়া মাত্রই অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই প্রসূতিকে জোর পূর্বক অপারেশন রুমে নিয়ে যাওয়া হয় সিজারের জন্য।এসময় প্রসূতি তার স্বামী ক্লিনিকের বাইরে আছেন বলে তাকে ফোনে ডেকে আনতে চাইলেও ওই চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাতে কোনো কর্ণপাত না করেই প্রসূতিকে অপারেশন রুমে নিয়ে গিয়ে তার সিজার সম্পন্ন করেন।যে সিজারে উল্লেখযোগ্য ডিগ্রি না থাকলেও একাই সার্জারি ও এনেসথেসিয়া করেন চিকিৎসক আকতারুজ্জামান বাবু নিজেই।সিজারের আগে এনেসথেসিয়ায় প্রসূতি পুরোপুরি অবস্ নাহলেও ফুটফুটে পুত্র সন্তানের জন্ম হলে সব অভিযোগ নিমিষেই ভুলে যান প্রসূতি ও তার পরিবার।কিন্তু নবজাতক পৃথিবীর মুখ দেখার পর স্বাভাবিক ভাবে কেঁদে ওঠার পরও অহেতুক অনভিজ্ঞ আয়া নবজাতক শিশুটির দু-পা ধরে মাথা নিচু করে অধিক সময় শিশুটিকে দোলাতে থাকেন।এতে শিশুটির নাক ও মুখ দিয়ে ফেনার মত পানি বের হতে থাকলে শিশুটির মারাত্মক শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।এসময় ওই ক্লিনিকের রেজিস্টার খাতায় চিকিৎসকের স্বাক্ষরের স্থানে নিজ স্ত্রী নন বিসিএস-এমবিবিএস চিকিৎসক ডা.মারজিয়া শবনমের নাম লিখে ডা.আকতারুজ্জামান বাবু দ্রুত ঝটকে পড়েন।শিশুটির শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ার দীর্ঘ আধা ঘন্টারও বেশি সময় ধরে শিশুটিকে কোনো রকম অক্সিজেন না দিয়ে ও চিকিৎসক না দেখিয়ে ক্নিনিক কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ সময় কালক্ষেপন করেন।এক পর্যায়ে নবজাতক শিশুটির অবস্থা আরো বেগতিক হলে দ্রুত শিশুটিকে অক্সিজেন ছাড়াই ডিমলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।অতিতেও এই ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসা ও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় একাধিক প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু হলেও অদৃশ্য কারনেই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।এই ঘটনার দিন ক্লিনিকটির রেজিস্টার ঘেটে দেখা গেছে, একইদিনে ডা.আকতারুজ্জামান বাবু তিনটি সিজার করে তিনটিতেই স্বাক্ষর করেছেন তার চিকিৎসক স্ত্রী ডা.মারজিয়া শবনমের নামেই!বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে,সিজারে বিশেষজ্ঞ সার্জারি ও এনেসথিস্ট চিকিৎসক ভিন্ন ভিন্ন থাকার নিয়ম থাকলেও তাদের বেশি অর্থ দিতে হয়।আর ডা.আকতারুজ্জামান বাবু ও তার স্ত্রী ডা.মারজিয়া শবনম দুজনে পুরো সিজার করে তা বাবদ নিয়ে থাকেন দুই হাজার থেকে পঁচিশ শত টাকা।এই জন্যই উপজেলার অধিকাংশ ক্লিনিক তাদের ও তাদের মত অন্যান্য চিকিৎসক দিয়েই সিজার করিয়ে থাকেন!এর আগে ডা.মারজিয়া শবনম উপজেলা সদরের পপুলার ক্লিনিকে একটি সিজার করতে গিয়ে নবজাতকের কপালের বিভিন্ন অংশ কেটে ফেলে ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়েছিলেন।অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টরা নিয়মিত তদারকি ও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা না করায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নাম সর্বস্ব লাইফ কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ বেশকিছু ক্লিনিক দীর্ঘদিন ধরে অল্প টাকায় অনভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা সিজারসহ বিভিন্ন অপারেশন করে প্রতারনার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অভিনব পন্থায় লাখ-লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েও থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরেই!তাই স্থানীরা এসব নাম সর্বস্ব অবৈধ ক্লিনিকে অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত অন্যথায় অনভিজ্ঞ চিকিৎসক কর্তৃক অর্থলোভী দায়সারা চিকিৎসা বন্ধে ওইসব ক্লিনিক বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।এ ব্যাপারে নবজাতক শিশুটির মা রহিমা অভিযোগ করে বলেন,একজন ব্যক্তিই আমাকে ইনজেকশন(এনেসথেসিয়া)দিয়েছেন ও আমার পেট কেটে সিজার করেছেন তা আমি স্পস্ট দেখেছি।অনেক যন্ত্রনা সহ্য করার পর সন্তানের জন্ম হলে আমি সব ভুলে যাই।আমার সন্তান প্রথমদিকে ভালোই ছিলো।পরে আয়া তার পা উপর করে ধরে বেশকিছু সময় দোলালে তার নাক ও মুখ দিয়ে ফেনার মত পানি বের হতে থাকায় শ্বাস কষ্ট দেখা দেয়।কিন্তু ক্লিনিকের লোকজন অক্সিজেন না লাগিয়ে দীর্ঘ সময় কালক্ষেপন করে হাসপাতালে নিলে আমার সন্তান মারা যায়।নাম সর্বস্ব লাইফ কেয়ার হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের একাংশের মালিক মতিয়ার রহমান সিজার একাই ডা.আকতারুজ্জামান বাবু করেছেন স্বীকার করে বলেন,নবজাতক শিশুটি হাসপাতালে মারা গেছে।আর আমি ঘটনার সময় ক্লিনিকে উপস্থিত ছিলামনা!তাই বিস্তারিত বলতে পারবোনা।ডা.আকতারুজ্জামান বাবু বলেন,আমি একজন সার্জারি চিকিৎসক।আমি এমবিবিএস(আর ইউ)পি.জি.টি(সার্জারি)।নবজাতক শিশুটি মায়ের গর্ভের পানি খেয়ে মৃত্যু বরণ করেছে।একাই সার্জারি ও এনেসথেসিয়া করেও রেজিস্টারে স্ত্রীর নাম লিখে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি এ ব্যাপারে আপনার সাথে দেখা করে কথা বলব বলে ফোন কেটে দেন তিনি।তার স্ত্রী ডা.মারজিয়া শবনম বলেন,ওইদিন আমি ওই ক্লিনিকে কোনো সিজার করিনি।কেউ আমার স্বাক্ষর করে থাকলে মোটেও তা ঠিক হয়নি।ডিমলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাশেদুজ্জামান বলেন,আমরা অভিযান চালালেই লাইফ কেয়ার