নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়েছে গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) সংসদীয় আসনে। ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া এমপির মৃত্যুতে শূন্য হয় এই সংসদীয় আসনটি। তফশিল অনুযায়ী এই আসনটিতে আগামী ১২ অক্টোবর ইভিএম এর মাধ্যমে উপ-নিবার্চন অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ধানমণ্ডিতে অবস্থিত দলীয় সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে মনোনয়ন ফর্ম দাখিল করেছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন। মনোনয়ন ফর্ম দাখিলের সময় উপস্থিত ছিলেন সাঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামশীল আরেফিন টিটু, ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. নুরুল আমিন, ফুলছড়ি-সাঘাটা উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গ ও সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন। ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জি.এম সেলিম পারভেজ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারজানা রাব্বি বুবলী। মনোনয়ন ফর্ম দাখিলের সময় উপস্থিত ছিলেন ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ মাহমুদ হাসান সুজা, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন মিয়া, ফুলছড়ি-সাঘাটা উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গ ও সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রাপ্তির ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। ২০০৬ সালের ৪ এপ্রিল থেকে ২০১১ সালের ১১ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলাম। এই সুবাদে দুই উপজেলার তরুণ ও যুব সমাজের মধ্যে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছি। তিনি আরও বলেন, প্রয়াত ফজলে রাব্বী মিয়া বেঁচে থাকতে প্রতিটি নির্বাচনে আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। মনোনয়ন না পেয়েও আমি নিজে সক্রিয় থেকে দলকে চাঙ্গা রেখেছি। কখনো আমি রাজনীতির নামে নোংরামি করেনি। সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের মূল নেতৃত্ব আমার সঙ্গে কাজ করছে। সাধারণ মানুষ আমাকে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রেখেছেন। উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন পেলে আমি আবারও আসনটি পুন:উদ্ধার করবো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের জন্য দেশরত্ন শেখ হাসিনার নিরলস প্রচেষ্টার সংগ্রামে একজন সারথী হয়ে ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ ভূমিকা পালনের চেষ্টা করবো।
মনোনয়ন ফর্ম দাখিলের পর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জি.এম সেলিম পারভেজ বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রাপ্তির ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। কারণ ছাত্রজীবন থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে আমি প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত ছিলাম এবং উপজেলা ছাত্রলীগের পরপর ৩বার সাধারণ সম্পাদক (১৯৮৮-২০০৪) ছিলাম। পরে ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের পরপর ২বার সাধারণ সম্পাদক (২০০৫-২০১৬) এবং পরপর ২বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (২০১৬-বর্তমান)। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছি। ফুলছড়ি-সাঘাটার স্থানীয় রাজনীতিতেও নেতাকর্মীদের কে সবসময় সময় দিয়েছি। বিভিন্ন সংকটকালীন সময় যেমন বন্যা ও শীতে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা সফল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমাকে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দিলে ফুলছড়ি-সাঘাটার সার্বিক উন্নয়ন ও জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে নিরলসভাবে কাজ করবো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের জন্য দেশরত্ন শেখ হাসিনার নিরলস প্রচেষ্টার সংগ্রামে একজন সারথী হয়ে ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ ভূমিকা পালনের চেষ্টা করবো।
মনোনয়ন ফর্ম দাখিলের পর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রয়াত এড. ফজলে রাব্বী মিয়া’র ছোট মেয়ে ফারজানা রাব্বী বুবলী বলেন, বাবার অনুপ্রেরণায় আমি রাজনীতিতে এসেছি। দীর্ঘদিন ধরে আমি সাথে রাজনীতি করে এই অবস্থানে পৌঁছেছি। আমার সাথে ৪০ হাজার আত্মীয় স্বজন এবং বাবার খ্যাতি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন দিলে ওইসব আত্মীয় স্বজন এবং বাবার খ্যাতি নির্বাচনের বিজয় নিশ্চিত করবে বলে তিনি আশা করছেন। বিজয়ী হলে বাবার অসমাপ্ত কাজ গুলো সমাপ্ত করবেন বলে জানান।
উল্লেখ্য, গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের সংসদ সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া গত ২২ জুলাই নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে মারা যান। এরপর গত ২৪ জুলাই আসনটি শূন্য ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সংসদ সচিবালয়। এই আসনের মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১৫ সেপ্টেম্বর, মনোনয়ন বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিলের শেষ তারিখ ১৬ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর, আপিল নিষ্পত্তি ১৯ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ২৩ সেপ্টেম্বর, আর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১২ অক্টোম্বর ইভিএম এর মাধ্যমে।