গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় শরিফা খাতুন (২১) নামে এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট (শেষ চিঠি) উদ্ধার করা হয়।
শনিবার সকালে এ ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানায় হত্যার প্ররোচনায় একটি মামলা করেন নিহতের ভাই ইদু মিয়া।
এর আগে, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মধ্য হাতিবান্দা গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। শরিফা খাতুন হাতিবান্দা গ্রামের আবদুল ওয়াহেদ আলীর মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, দেড় বছর আগে একই গ্রামের আবদুল গফুর মিয়ার সাথে প্রেমের সম্পর্ক হয় শরিফা খাতুনের। গফুরের ঘরে স্ত্রী-সন্তান থাকা সত্বেও তারা গোপনে বিয়ে করে। পরে বিষয়টি এলাকাবাসি ডিভোর্সের মাধ্যমে সমাধান করে। কিছু দিন পর আবারও তারা বিয়ে করে। একইভাবে তাদের আবারও বিবাহ বিচ্ছেদ করায় দুই পরিবার।
শুক্রবার শরিফা খাতুনকে দেখতে আসে বরপক্ষ। কিন্তু গফুর তাকে আবারও বিয়ের প্রলোভন দেয়ায় শরিফা বিয়ে ভেঙে দেয়। পরে বরপক্ষ চলে গেলে সে একটি সুইসাইড নোট লিখে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
সুইসাইড নোটের লেখা হুবহু তুলে ধরা হল:
প্রিয় মা বাবা,
পত্রের শুরুতে আমার হৃদয় ভরা ভালবাসা নিও। আশা করি তোমরা সবাই ভাল আছো এবং ভাল থাকবা। সেক্ষেত্রে আমার জন্য সবাই দোয়া করবা। আমার মা বাবা এবং ভাইয়াকে আমি অনেক কষ্ট দিছি একজনকে ভালবেসে।
আমি আমার জীবনের থেকেও ওকে অনেক বেশি ভালবাসছি। আজ সে আমাকে বুকে ছুরি মেলে দিলো, আমি গফুরকে অন্ধ মতো বিশ্বাস করেছিলাম। সে আমাকে যা বলেছে আমি তাই করেছিলাম……
সে আমাকে দুই বার বিয়ে করে কিন্তু একবারও ঘর সংসার করে নাই।
আমার বাবা মা এবং ভাইয়া সহকারে আমার জন্য ছেলে দেখতে যায় এবং আমাকেও দেখতে আসে। কিন্তু গফুর আমাকে বিয়ে করতে দেয় নাই…
শেষে এসে জানতে পারি সে আমার জীবনটা নষ্ট করে দিল। তাই আমি ভাবলাম পৃথীবিতে বেঁচে থাকার কোন দরকার নাই। যাকে ভালবাসি তাকে পাইলাম না; সে জীবন বেঁচে কি লাভ হবে।…
শুধুমাত্র গফুরকে ভালবেসে আমার মৃত্যু হলো। আমি নিজের ইচ্ছায় মরতে চাই নাই….
সুন্দরগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর কবির বলেন, ‘দুপুরে মরদেহ ময়না তদন্ত সম্পন্ন হবে জেলা হাসপাতাল মর্গে। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আসামিকে ধরতে অভিযান চলছে।’