গণমাধ্যমকর্মীর উপর আক্রোশ মূলক নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় ভরা ঝুড়ির সন্ধান মিলেছে দিনাজপুর উপজেলার ঘোড়াঘাট উপজেলায়। সাংবাদিকের উপর মিথ্যা মামলা ও হয়রানির অভিযোগে দিনাজপুরের হাকিমপুর প্রেসক্লাবে ঘোড়াঘাট থানার ওসি আজিম উদ্দিন সহ থানার বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাংবাদিজ ইফতেখার আহমেদ বাবু। তিনি “দৈনিক ডেলটা টাইমস” পত্রিকার ঘোড়াঘাট প্রতিনিধি। এছাড়াও ঘোড়াঘাট উপজেলার আওয়ামীলীগের ৮ নং ওয়ার্ডে সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের সক্রিয় সদস্য। সেই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য । নিজ এলাকায় একজন নির্লোভ ও নির্ভিক গণমাধ্যমকর্মী এবং সমাজসেবক হিসাবে ব্যাপক জনপ্রিয়। তার উপর এমন নেক্কারজনক ঘটনা গুলো ঘটে যাওয়ায় স্থানীয়রাও হতবাগ।
২০ আগস্ট শুক্রবার দুপুরে দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিক ইফতেখার আহমেদ বাবু সাংবাদিকদের বলেন, গত বছর ২৫ ডিসেম্বরে ঘোড়াঘাট থানার ওসি আজিম উদ্দিনের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয় আমার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম এবং এবিষয়ে নিউজ করার প্রস্তুতি নেয়। পরে ৩০ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০ টায় থানার ওসি আজিম উদ্দিন সহ থানা এসআই জিয়া, এসআই দুলু, এসআই খুরশিদ, এএসআই ছারোয়ার ও কনেস্টবল মাসুম, কনেস্টবল মোস্তফা, কনেস্টবল অবাইদুর, কনেস্টবল মেহেদি আমার বাড়িতে হামলা চালায়। তখন তারা আমার বাড়ির দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। পরে তারা বাড়ির প্রাচির টপকে ভিতরে প্রবেশ করে। বাড়িতে প্রবেশ করে আমাকে মারধোর করতে থাকে এবং আমার স্ত্রীকে মারধোর সহ শ্লীলতাহানি করে। পরে বাড়ি ভাংচুর করে প্রায় ১০ লাখ টাকা এবং আমার স্ত্রীর গলার চেন সহ পাঁচ ভরি সোনা, আমার ব্যবহারকৃত ল্যাবটপ, মোবাইল ফোন ও আমার স্ত্রীর একটি প্রাইভেট কার এবং আমাকেসহ রাত সাড়ে ১১ টার দিকে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে তারা সারারাত আমাকে শারীরিক নির্যাতন ও কারেন্ট শট দিয়ে ল্যাবটপ ও মোবাইলের পাসওয়ার্ড নিয়ে নেয়। পরদিন আমার স্ত্রীর প্রাইভেট কার চুরির মামলা এবং ডিজিটাল মামলা করে দিনাজপুর জেলহাজতে প্রেরণ করেন। এতে করে ৯৭ দিন জেলখানায় আমি থাকি। এর ফাঁকে ওসি আজিম উদ্দিন আমার বিরুদ্ধের আরও ৯ টি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ ৯৭ দিন জেল খেটে এসে দেখি আমার বিরুদ্ধে ১০ টি মিথ্যা মামলা এই ওসি করেছে। আমি একজন সাংবাদিক, আজ আমি মিথ্যা মামলার আসামি। তাই আমি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রলায় এবং পুলিশ প্রধানের নিকট নিজে সশরীরে লিখিত অভিযোগ করি। তারই আলোকে গত ১২ আগস্ট রংপুরের অতিরিক্ত ডিআইজি আমার স্বপরিবার সহ আমাকে জিজ্ঞাসা করার জন্য হাজির হতে বলেন।
পরে ওসি আমার উপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৫ আগস্ট শোক দিবসে ঘোড়াঘাটে জামাত-বিএনপির নাশকতা পরিকল্পনাকারী হিসাবে আবার আমাকে জামাত বিএনিপ সক্রিয় সদস্য বানিয়ে আবার মামলা করেন এই ওসি আজিম উদ্দিন। মোট আমার ১১ টি মামলা।
মিথ্যা মামলা আর হয়রানির ভয়ে আজ আমি সংসার হারা। আমার পরিবারসহ সন্তান- স্ত্রীর সাথে দেখা করতে পারছিনা। তাই আপনারা আমার জাতি ভাই, আমি আজ দিশেহারা, আপনারা আমাকে বাঁচান।
উল্লেখ্য,দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলায় একজন গণমাধ্যমকর্মী হিসাবে ইফতেখার আহম্মেদ বাবু ঘোড়াঘাট থানার ওসি আজিম উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার আক্রোশের শিকার হয়ে মিথ্যা মামলার আসামী হয়ে নিজে ও পরিবারের জীবন নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন। আজ তিনি নিজের ও পরিবারের জীবন রক্ষায় গণমাধ্যমকর্মী দের ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।