একটি বুভুক্ষু রাত
জিল্লুর রহমান প্রামানিক
আগুন পোড়া হলুদ রোদের অলক্ত চঞ্চুতে
কালো তিসির বক্ষ ভেদিয়া নক্ষত্রের মেলা
জীবন থেকে বেঁচে যাওয়া বাকীটা সময়
তোমাকেই খুঁজে নিঃসঙ্গ ডাহুকের মতো
বিপন্ন রোদের আলোয়
কোনো এক বিজন-বিষণ্ণ দুপুর
তোমারই রেখে যাওয়া সময়ের উদ্বাসন
উদ্বেগ- উদ্বেলিত হলুদ পাখির
স্বপ্ন- দুঃস্বপ্নের পোড়ো ভিটা
মখমল পায়ে নরম-কোমল আলোআঁধারির ঘুঙুর
মৃত ভায়োলিনের সুর বাজে আমারই স্মৃতির করিডোরে অন্যরকম উদভ্রম আকুলতায়
উন্নিদ্র রাতে ছায়ার ওপাশে কেবল
উন্মন মধ্য নিশিতে তোমারই ছবি ভাসে মনে
ডিমের কুসুমের মতো বৈরাগী চাঁদের আঁচলে
আমার প্রণয়ে দিশেহারা উদ্বাস্তু গাঙচিল
ক্লান্ত ডানায় খেলে তোমার করুণ প্রণত আধিবদন
কী করে বুঝাই বলো ?
আমার বয়সী ভারি চশমার স্যালুলয়েডের
মশৃণ শরীর বেয়ে আজো ঝরে ক্রমাগত
পুড়ে যাওয়া মোমের মত ফোঁটায় ফোঁটায়
তোমার চোখ ভরা স্বপ্নকাজল!
অতঃপর রাতের বিবাগী নিস্তব্ধতায়
এ আন্ধা চোখের বেলকনিতে
তোমাকে দেখে-দেখেই
তোমারই তপ্ত নিসাসে মোড়া
বিন্দুবিন্দু ঘামের ভেতর
পরিপাটি সুগন্ধি চুলের ভেতর
ফোঁটায় ফোঁটায় তোমাকে ছোঁতে যেয়ে হারিয়ে যাই
এই বুভুক্ষু রাতের নিগূঢ় আঁধারে
তুিমি শূন্য পথহারা জোনাকির দল
চপল-চঞ্চল মৃদু বাতাসের গায় তোমারি চিত্রলিপি দোলে আমারি চোখের পাতায়
বারান্দার ঐ কাঁঠালিচাঁপার পাপড়িতে লেখি
তুমিশূন্য আমার জীবনের বিমূর্ত চম্পূ কাহিনী !
জিল্লুর রহমান প্রামানিকঃকবি ও লেখক।তাঁর প্রকাশিত বই সংখ্যা ৪টি।কবি গাইবান্ধা সদর উপজেলার ঘাগোয়া ইউনিয়নের রূপার বাজারে জন্মগ্রহন করেন।তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়ালেখা করেন।